E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় দোকান ভাঙচুর করে টাকা ও মালামাল লুট

২০১৪ আগস্ট ০৮ ১৯:১৭:৪০
সাতক্ষীরায় দোকান ভাঙচুর করে টাকা ও মালামাল লুট

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে শার্টারের তালা ভেঙে নগদ টাকা ও মালামাল লুটপাট করে দোকান জবরদখলের ঘটনায় থানার আদেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ।

এদিকে আদালতের মামলার আদেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা রেকর্ড না করায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইনামুল হকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মামলার খবর পেয়ে মূল আসামী পলাশ দেবনাথ পালিয়ে গেলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও লুট হওয়া মালের থলিদাররা জবরদখলকৃত তালাবদ্ধ দোকান ঘর পাহারা দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি লুট হওয়া মালামাল বিক্রির জন্য গোপনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওই মহলটি।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার ঘোলপট্টীর আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেনের বন্দোবস্তকৃত আমিরুল ইসলামের ভাড়া নেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘আরাফাত বিতান’ জবরদখলের হুমকি দেয় পুরাতন সাতক্ষীরার সুদ ব্যবসায়ি পলাশ দেবনাথ। এ ঘটনায় আমিরুল ইসলাম পরদিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলে খবর পেয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে ২৬ জুলাই দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আরাফাত বিতানের তালা কেটে তাতে নতুন তালা লাগিয়ে দেয় পলাশ দেবনাথ ও তার লোকজন।

আদালতের নির্দেশে পরদিন উপপরিদর্শক কবীর হোসেন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে গত ৫ আগষ্ট সকাল ৬টার দিকে পলাশ দেবনাথের নেতৃত্বে সুলতানপুর বড়বাজার ব্যবসায়ি সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. রওশান আলী, মুদি ব্যবসায়ি সমিতির সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান মুকুল, রওশান আলী, একই এলাকার গোলাম মোস্কফা খোকন, কর্ণেল বাবু, সঞ্জয় পাল, পলাশ দেবনাথের ভগ্নিপতি স্বপন দেবনাথ ও বাবা মাদার দেবনাথসহ কতিপয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা কর্মী আরাফাত বিতানের তালা ভেঙে ক্যাশবাক্সে থাকা নগদ তিন লাখ টাকাও ২৫ লাখ টাকার মনোহরি দ্রব্য লুটপাট করে।

লুটপাটে বাধা দেওয়ায় আমিরুল ইসলামকে মারপিট করে একটি ঘরে আটক রেখে তার কাছে থাকা ৯০ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। যদিও তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আমিরুল ইসলাম বাদি হয়ে ঘটনার দিন দুপুরে পলাশ দেবনাথসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দেন। তিন দিনেও পুলিশ মামলা না আমিরুল ইসলাম বিষয়টি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরকে জানালে তিনি আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

সে অনুযায়ি আমিরুল বৃহস্পতিবার আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করলে বিচারক সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহীদুল ইসলাম এজাহার হিসেবে গণ্য করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশটি বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় থানার বকশী আজিমের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিকে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে মামলার আদেশ জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে জবরদখলকৃত দোকানে তালা লাগিয়ে আত্মগোপন করে পলাশ দেবনাথ। লুটপাটে পলাশ দেবনাথের সহযোগিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। এমনকি তার ভগ্নিপতি স্বপন দেবনাথ ও বাবা মাদার দেবনাথ লুটকৃত মালামাল বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারা আরো জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয় দৈনিকে বিবৃতির মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকার কথা উল্লেখ করে কয়েকজন প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ দিলেও রওশান ও মুকুল তাদের জিম্মায় আমিরুলের লুট হওয়া মালামাল রয়েছে বলে উল্লেখ করে। তার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই মামলার খবর পেয়ে তারা নতুন করে দৈণিক কালের চিত্রে বিবৃতি দিয়ে তা অস্বীকার করে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইনামুল হক জানান, শুক্রবার রাতেই মামলা রেকর্ড করা হবে।

(আরকে/জেএ/আগস্ট ০৮, ২০১৪)


পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test