E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাটমোহরে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে প্রতারণা

২০২০ মার্চ ০৬ ১৬:৩৭:৩৩
চাটমোহরে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে প্রতারণা

চাটমোহরে (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে বেকারীতে ভ্রাম্যমান আদালতের ভয় দেখিয়ে ইউএনও সেজে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। 

বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই প্রতারণার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক ওই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভূক্তভোগী সুফিয়া খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মো. বাকি বিল্লাহ তার মোবাইলে ফোন দিয়ে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘আপা আপনার বেকারিতে এসিল্যান্ডসহ ভোক্তা অধিকারের লোকজন যেতে পারে। কারখানা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখেন। তাছাড়া জরিমানা করতে পারে।’ এর দুই মিনিট পর ০১৯১০-৫৪১৯৩৯ এই নাম্বার থেকে নিজেকে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সুফিয়া খাতুন পরিচালিত বালুচর এলাকায় (উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন) ‘বিপাশা ব্রেড ও বিস্কুট বেকারী’তে চাটমোহরের ইউএনওসহ অভিযান চালানো হবে বলে জানানো হয়।

তবে ২০ হাজার টাকা দিলে দিলে বেকারীতে যাবেন না বলে জানানো হয়। এরপর ভয় পেয়ে সুফিয়া খাতুন ওই নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা দেন। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আরও ১০ হাজার টাকা চাইলে সুফিয়া খাতুনের সন্দেহ হয়। এ সময় তিনি ইউএনওর সাথে কথা বলতে চাইলে ফোনের মাধ্যমে একজনকে নকল ইউএনও সাজিয়ে কথা বলিয়ে দেয় ওই প্রতারক চক্র। পরে সন্দেহ হওয়ায় ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হানের সরকারি নাম্বারে ফোন দিলে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি। পরে সুফিয়া খাতুনকে তার অফিসে ডেকে পাঠান ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান।

এরপর বিস্তারিত শুনে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক বাকি বিল্লাহকে ইউএনও’র অফিস কক্ষে ডেকে ফোন দেয়া এবং ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকি বিল্লাহ ফোন দিয়ে সতর্ক করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে ইউএনও তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে চাইলে ওই ২০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দেওয়ার কথা বলেন। তবে শুক্রবার পর্যন্ত ওই টাকা ফেরৎ দেননি বাকি বিল্লাহ। এদিকে সুফিয়া খাতুন কারো নাম উল্লেখ না করে চাটমোহর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে আমার মোবাইলে বিভিন্ন বেকারীর তালিকা চাইলে আমি তালিকা দেই। এরপর বেকারীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত যেতে পারে মর্মে সুফিয়া আপাকে সতর্ক করার জন্য ফোন দিয়েছিলাম। এটা আমার অন্যায় হয়েছে, তবে কারা টাকা নিয়েছে বা কারা জড়িত এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’ ইউএনওর সামনে টাকা ফেরৎ দিতে চাইলেন কেন এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ইউএনও স্যার আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে আামি ভয় পেয়ে টাকা ফেরৎ দিতে চেয়েছি।’

ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘সতর্ক করার কাজ ওই লাইসেন্স পরিদর্শকের না। আর এসিল্যান্ড তো ছুটিতে আছে। এসিল্যান্ডের নাম ভাঙ্গিয়ে কিভাবে ফোন দেয় সে? প্রাথমিকভাবে তার (বাকি বিল্লাহ) সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে এবং টাকা ফেরতও দিতে চেয়েছে। কিন্তু শুনেছি সে টাকা ফেরৎ দেয়নি। আমি সুফিয়া খাতুনকে থানায় মামলা করতে বলেছি।’ পুলিশি তদন্তে সব বেড়িয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে প্রতারক চক্র এই কাজ করেছে। তবে মোবাইলের সূত্র ধরে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এস/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test