টাকা ছিনতাই মামলায় বহুল আলোচিত শাহীন আলম পুলিশের খাঁচায়

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : চাঁদার দাবিতে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় এসএম শাহীন আলম নামের এক দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে তাকে সাতক্ষীরা শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত এসএম শাহীন আলম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের হাবাসপুর গ্রামের ময়নুদ্দিন সরদারের ছেলে।

হাবাসপুর গ্রামের তোফাজউদ্দিন সরদারের ছেলে নাসিরউদ্দিন সরদার জানান, তাদের গ্রামের জিএম শাহীন আলম নিজেকে কখনো মানবাধিকার কর্মী, কখনো সাংবাদিক আবার কখনো পুলিশের সোর্স পরিচয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বা, থানায় জিডি করে তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে নিয়ে নন এফআই আর মামলা করে জেল খাটিয়ে থাকে। তার ভয়ে এলাকায় কেউমুখ খুলতে সাহস পায় না।

তার বিরুদ্ধে আশাশুনির পাইথালী গ্রামের দুলাল দেবনাথের মেয়ে পুজা দেবনাথকে অপহরণ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া শাহীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশন অপরাধ শাখার চেয়ারম্যান হিসেবে দাবিদার আশাশুনির ইউসুফপুরের শহীদুল ও তার বাহিনীর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অন্যের জমি দখল করিয়ে দেওয়া , নাবালিকা ধর্মান্তরিত করে ভুয়া বিয়ে পড়িয়ে অন্যত্র আটক রেখে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন প্রতারনার অভিযোগ রয়েছে।

নাসিরউদ্দিন আরো জানান, তার ছেলে ও ভাই দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় কর্মরত। এ কারণে একই গ্রামের এসএম শাহীন আলম ও তার সহযোগী মহিদুল ইসলাম মধু, মিজানুর রহমান ও মোক্তার সরদার তার কাছে বিভিন্ন সময়ে দু’ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। টাকা না দিলে ব্রহ্মরাজপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক হাসানের মাধ্যমে নাশকতার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

একপর্যায়ে গত পহেলা মার্চ সন্ধ্যায় বুধহাটা স’মিল থেকে কাঠ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার সময় নিজ বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর এসে পৌঁছালে শাহীনসহ চারজন তার গতিরোধ করে। এ সময় শাহীনের নির্দেশে মোক্তার সরদার তার কাছে দাবিকৃত দু’ লাখ চাঁদার টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে আপত্তি করায় শাহীনের নির্দেশে মহিদুল ইসলাম মধু ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে শাহীন তার (নাসির) বুকপকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। বাকী টাকা আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে না দিলে ফল ভাল হবে না বলে জানিয়ে দেয় শাহীন ও তার সহযোগীরা।

এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে বৃগষ্পতিবার শাহীন, মোক্তার, মধু ও মিজানুরসহ অজ্হাতনামা চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। শনিবার থানায় এ মামলা(জিআর-১৭৯/২০) রেকর্ড করে সদর থানার উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমানকে তদন্তভার দেওয়া হয়।

এদিকে শাহীন আলম গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার বহু কাহিনী জনসম্মুখে চলে আসবে বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, রবিবার সকালে সাতক্ষীরা শহরের একটি স্থান থেকে এসএম শাহীন আলমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত শাহীন আলমের বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

(আরকে/এসপি/মার্চ ০৮, ২০২০)