E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

করোনা আতংকে মাদারীপুরবাসী 

২০২০ মার্চ ১০ ১৭:৫৬:৫৩
করোনা আতংকে মাদারীপুরবাসী 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : গত দুদিন ধরে মাদারীপুরবাসী করোনা ভাইরাসের আতংকে থাকলেও মঙ্গলবার দুপুর থেকে সর্বত্রই আতংক আরো বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে, এক ইতালি প্রবাসী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও ২৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এমন খবরে মাদারীপুরের শহর, গ্রাম সর্বত্র মানুষের মধ্যেই চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এই ব্যাপারে মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগ কথা বলতে রাজি না হলেও সবাইকে সচেতন থাকা ও আতংকগ্রস্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদী, কালিরবাজার, পেয়ারপুর, ঘটকচর, দুধখালী, বাহাদুরপুরসহ বেশ কিছু এলাকার বহু লোক ইতালীতে আছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন দেশে এসেছেন। প্রথমদিকে কোন সমস্যা না হলেও গত দুদিন ধরে প্রবাসীদের ফিরে আসা নিয়ে, এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।

ঐ সব এলাকার মানুষজন জানান, এক ইতালি প্রবাসী সম্প্রতি মাদারীপুর আসেন। এরপর করোনাভাইরাসের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে তিনি নিজেই আইইসিডিআরকে জানান। পরে তাকে ঢাকায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও তিনি এলাকার যাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এমন ২৯ জনকে চিহ্নিত করে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার এই খবরে মাদারীপুরের শহর, গ্রাম সর্বত্রই মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ছোট-বড় সকল মানুষকে মুখে মার্কস ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

তবে এই তথ্যের ব্যাপারে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল নিশ্চিত করেননি। তারা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের নতুন ২৫০ শয্যা ভবন আংশিক প্রস্তুত করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দুটি কেবিনের ৪টি বেড সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২টি করে বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অখিল সরকার বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দুটি কেবিনের ৪টি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ২৫০ শয্যার নতুন ভবনটি প্রস্তুত আছে। যদি প্রয়োজন হয় তা হলে নতুন ভবনে রোগী রাখার জন্য আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে তা ব্যবহার করবো।

তিনি আরো বলেন, আমি নিশ্চিত না, তবে আপনাদের মতো আমিও শুনেছি, মাদারীপুর সদর উপজেলার এক ইতালি প্রবাসী বাড়ীতে আসার পর তার স্বরদিকার্শি, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি নিজেই সরাসরি ঢাকাতে আইইসিডিআরের সাথে যোগাযোগ করে তিনি ঢাকা চলে যান। এছাড়াও তিনি এলাকার যাদের সাথে যোগযোগ করেছেন এমন কয়েক জনকে চিহ্নিত করে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ঢাকাতে। তবে আমাদের সদর হাসপাতালে করোনো ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগী আসেননি।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. শফিকুল ইসলাম করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, হাঁচি কাঁশির সময় নিয়ম মেনে চলতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজন ছাড়া জনসমাগম না করার অনুরোধ করেন তিনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে নতুন কোন ভবন আছে কি না। আমরা জানিয়েছি এখানে নতুন একটি ভবন আছে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ঐ রোগীর মায়ের সাথে আমি আজও যোগাযোগ করেছি। তার মা জানান, সে এখন ভালো আছে। তার চিকিৎসা চলছে। ইতালি থেকে ১০ দিন আগে দেশে আসেন। তার আত্মীস্বজনকে আলাদা থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ২৯ জনকে ঢাকা নেয়া হয়েছে কি না আমার কাছে এমন কোন তথ্য নেই। মানুষ করোনা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। বুধবার জেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরী মিটিং ডেকেছি সকল মানুষকে সচেতন করার জন্য।

(এএস/এসপি/মার্চ ১০, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test