E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীশংকৈলে গ্রামের মানুষ হয় নি সচেতন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ

২০২০ মার্চ ২৯ ১৮:০৮:২৭
রাণীশংকৈলে গ্রামের মানুষ হয় নি সচেতন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ

খুরশিদ আলম শাওন, রাণীশংকৈল : বিশ্বব্যাপী করোনা প্রতিরোধের অংশ হিসাবে গন-সচেতনতায় মুল হাতিয়ার হলেও ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের গ্রাম পর্যায়ের মানুষ এখনও হয় নি সচেতন। তারা একে অপরের বাড়ীতে অবাধে চলাফেরা ছোট খাটো বাজারগুলোতে জটলা বেধে আড্ডা দেওয়াসহ গ্রামের মহিলারা তাদের বাসা বাড়ীর কাজ করছেন একে বারে অ-সচেতন হয়ে। এছাড়াও গ্রাম পাড়া মহল্লার হোটেল চা ও পানের দোকানগুলো আপাতত সরকারীভাবে বন্ধ রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও উন্মুক্তভাবেই তারা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

তবে প্রশাসনের লোকজন গেলে তারা তড়িঘড়ি করে দোকানপাট বন্ধ করে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন চলে গেলে আবারো দোকান খুলে দেদারসে বেচাকেনা করছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের মতে আপাতত লোকসমাগম কমিয়ে মানুষকে একা একা চলাফেরা করতে হবে। এছাড়াও মানুষকে সামাজিক দুরত্ব কমপক্ষে এক ফিট দুরত্ব বজায় রেখে কথাবার্তাসহ প্রয়োজনীয় বিষয় সাড়তে হবে। না হলে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এছাড়াও করোনা আক্রমণের পর থেকে বাইরের জেলায় থাকে এমন লোক নিজ এলাকায় এলে তাকেও ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টাইনে বাধ্যতামুলক থাকতে হবে। কিন্তু তা মানছে না জেলার বাইরে থেকে রাণীশংকৈলে আসা মানুষেরা।

গত শনিবার সরেজমিনে উপজেলার বাচোর কাতিহার বাংলাগড় ফুটানী টাউন কাশিপুর মালিভিটা চৌরাস্তা বাজার ধর্মগড় কাউন্সিল বাজার লক্ষির হাট দেহট্রী ভরনিয়াসহ অনন্ত ৩০ গ্রামের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে ঘুরে এ চিত্র দেখা মিলে।

উপজেলার লক্ষির হাটে দেখা যায়, আনারুল ও রেজাউল করিম নামে দুইটি চা হোটেল খোলা আশে পাশে মানুষ জটলা বেধে চা খাচ্ছে। মীরডাঙ্গী হাটের নিচ মার্কেটে এনামুল চা ব্যবসায়ী ও ধর্মগড় কাউন্সিল বাজারের শামীম চা দোকান খুলে দেদারশে বেচা কেনা করছে। এমনি অবস্থা উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামের।

এছাড়াও গ্রামের মহিলারা মুখে মাস্ক না পড়ে অবাধে সংসারের যাবতীয় কার্যক্রম যেমন, মাঠে গরু বাধা, রান্না করা বর্তমানে গম মেড়ে তা বস্তায় ভরা কাজগুলো একে বারে অসচেতনভাবে করছে।

এছাড়াও বর্তমানে ধান ক্ষেতে আগাছা পরিস্কার করে কীটনাশক দেওয়ার কাজ চলছে। কৃষকরা কাজের ভীড়ে বাড়ী যেতে না পেরে অ-পরিচ্ছন্ন হয়ে মাঠে বসেই সামান্য পানি দিয়ে হাত ধুয়ে দুপুরের খাওয়া করছে।

এদিকে জেলার বাইরে থেকে ঢাকা কুমিল্লা চট্রগ্রাম নোয়াখালী থেকে এসেছে তারাও নিয়মনীতি না মেনে অবাধে হাটে বাজারে ঘুরা ফেরা করছেন। এদের কেউ দমাতে পারছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এদের সচেতনসহ বাড়ীতে থাকার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের ব্যবস্থা নিতে জানালে তারাও কোন কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে এ প্রতিবেদকের কাছে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন ,স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনসচেতনতা মুলক কোন কার্যক্রম সহ করোনা নিয়ে সরকারী নির্দেশ পালন করার জন্য কোন ধরনের প্রচার প্রচারণা ও নিজ এলাকাকে সুরক্ষা রাখার ক্ষেত্রে তেমন ভুমিকা রাখছেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের পাশাপাশি যে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একটা দায়িত্ব রয়েছে সে দায়িত্ব পালনে তাড়া একে বারে নিস্ক্রিয়।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রশাসনের একটি বিশাল অংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। তারা যদি দায়িত্ব সহকারে কাজ না করে তাহলে তো আমরা বেকায়দায় পড়ি। তারপরেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া আছে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে ও তাদের নির্বাচনী এলাকার মানুষদের সুরক্ষিত রাখতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসাবে সরকারী আদেশ নির্দেশ বাস্তবায়ন করার জন্য। তাছাড়াও আমরা গ্রাম গঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে টহল অব্যহত রেখেছি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে ধর্মগড় ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম মুকুল ও কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, আমরা সচেতন হতে মানুষকে বলছি কিন্তু তাড়া শুনছে না। তারপরেও আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আপনাদের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় সচেতন মানুষ প্রশ্নে বলেন, না অভিযোগ সঠিক নই আমরা সাধ্যমত কাজ করছি।

(কেএস/এসপি/মার্চ ২৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test