E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

২০২০ এপ্রিল ০৪ ২৩:৩০:৫৫
বরিশালে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : “আমার মেয়ে তাসবিয়া আক্তার আমাকে ফোন করে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলো। বলেছিলো, বাবা আমাকে মেরে ফেলা হচ্ছে আমাকে বাঁচাও”। এরপরই তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি তাসবিয়ার বাসায় গিয়ে দেখি ওর নিথর দেহ পরে রয়েছে। পাশেই দাঁড়িয়েছিলো প্রাইভেট শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন সুমন। আমি ওই বাসায় প্রবেশের পর পরই কৌশলে সুমন পালিয়ে যায়। সেই থেকে অদ্যবর্ধি তার কোন খোঁজ নেই।

এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা না দিয়ে আদালতে মামলা করার কথা বলছে। শনিবার দুপুরে সংবাদকর্মীদের কাছে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন, নগরীর রূপাতলী এলাকার পারুল মঞ্জিল ভবনে নিহত প্রবাসীর স্ত্রী তাসবিয়া আক্তারের (২৬) হতভাগ্য পিতা মাওলানা মোঃ ফরিদ উদ্দিন। নলছিটি উপজেলার নলবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, তার মেয়ে জামাতা কবির হোসেন সৌদি প্রবাসী। দুই সন্তান নিয়ে তার মেয়ে তাসবিয়া আক্তার দীর্ঘদিন থেকে রূপাতলী এলাকার পারুল মঞ্জিল ভবনে বসবাস করতো।

নিহত তাসবিয়ার ভাই সৌদি প্রবাসী মোঃ তাজ জানান, তাসবিয়ার সন্তানকে প্রাইভেট পড়াতেন কালিজিরা এলাকার সানরাইজ কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক ইলিয়াস হোসেন সুমন। বিভিন্ন সময় সুমন বিপুল অংকের টাকা তাসবিয়ার কাছ থেকে ধার বাবদ নিয়েছে। কিন্তু টাকা চাইলে সে গড়িমসি শুরু করে। গত ২৯ মার্চ শিক্ষক সুমন ও তার স্ত্রী তাসবিয়াকে তার বাসায় গিয়ে মারধরও করেছে। নিহত তাসবিয়ার ভাই আরও জানান, তার বোনের কাছে প্রায় নগদ আট লাখ টাকা ছিলো। শিক্ষক সুমন তার বোনকে ফুঁসলিয়ে ওই টাকা আত্মসাত করেছে এবং টাকা চাওয়ার কারণেই পরিকল্পিতভাবে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহতের পিতা ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ের সুখের সংসারছিলো। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সমস্যা ছিলোনা যে তাকে আত্মহত্যা করতে হবে। শিক্ষক সুমনই আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। তাসবিয়ার স্বামী সৌদি প্রবাসী কবির হোসেন মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ১০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আত্মহত্যা কেন করবে? আমাদের সংসারে সুখ শান্তির কোন কমতি ছিলোনা। তিনিও দাবি করেন, শিক্ষক সুমনই আমার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করছি।

নিহতের পিতার দাবি, ঘটনার দিন ৩০ মার্চ সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তার মেয়ে তাসবিয়ার বাঁচার আকুতি জানানো ফোন পেয়ে তিনি নলছিটি থেকে বরিশালের বাসায় এসে মেয়ের লাশ দেখতে পান। তখন ওই ঘরের মধ্যে শিক্ষক সুমন অবস্থান করছিলো। কিন্তু কৌশলে সে (সুমন) পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই প্রাইভেট শিক্ষক সুমন আত্মগোপন করেছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, নগরীর কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ বলেছেন আদালতে মামলা দায়ের করতে। নিহতের লাশের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত থানা পুলিশ কিছুই করতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী) মোঃ রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা। রিপোর্ট আসার পর আইনগগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ০৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test