E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্যাতিত শিশুকন্যাকে ফিরে পেতে চান গৃহবধূ হেমা

২০২০ এপ্রিল ১৪ ১৬:১৪:০০
নির্যাতিত শিশুকন্যাকে ফিরে পেতে চান গৃহবধূ হেমা

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের কুমুল্লী নামদার উত্তর চরপাড়া গ্রামের গৃহবধূ হেমা আক্তার তার গর্ভজাত শিশুকন্যা আসফিয়া আক্তারকে ফেরত পেতে চান। আট বছরের অবুঝ কন্যা আসফিয়া সৎমায়ের অমানষিক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করছে বলে অভিযোগ করেন অসহায় মা হেমা আক্তার। মেয়েকে ফেরত না পেয়ে ওই গৃহবধূ দিনরাত চোখের পানি ফেলছেন।

জানা যায়, সদর উপজেলার কুমুল্লী নামদার উত্তর চরপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. হিরা মিয়ার একমাত্র কন্যা হেমা আক্তারের সাথে পাশের সুরুজ দক্ষিণপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছেলে শহীদুল ইসলামের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই শহীদুল ইসলাম কাজের সন্ধানে প্রবাসে পাড়ি জামান।

গৃহবধূ হেমা আক্তার জানান, তার স্বামী শহীদুল ইসলাম প্রবাসে থাকতেই বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের বিশা মিয়ার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে বিলকিছ আক্তারের সাথে মোবাইলফোনের মাধ্যমে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে দেশে ফিরে এলে ওই পরকীয়ার সম্পর্ক আরো জোরদার হয়। পরকীয়ার কারণে হেমা-শহীদুলের পরিবারে অশান্তি দেখা দেয়। শহীদুল তার স্ত্রী হেমা আক্তারের উপর নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ হেমা আক্তার বাধ্য হয়ে স্বামী শহীদুল ইসলামকে তালাক দিয়ে পিত্রালয়ে চলে যান। এ সময় তার গর্ভজাত কন্যা আসফিয়া আক্তারকে স্বামী শহীদুল ইসলাম রেখে দেন। একাধিকবার তাকে হেমা আক্তার নিজের কাছে ফেরত চাইলেও দেওয়া হয়নি।

তিনি আরো জানান, গৃহবধূ হেমা আক্তার বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে শহীদুল ইসলাম তার পরকীয়ার প্রেমিকা বিলকিছ আক্তারকে বিয়ে করেন। বিলকিছ আক্তার বাড়িতে এসে শিশুকন্যা আসফিয়া আক্তারকে মেনে নিতে পারেন নি। তিনি আসফিয়ার উপর অমানষিক অত্যাচার-নির্যাতন চালাতে থাকেন। সম্প্রতি বিলকিছ আক্তার বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় শিশুকন্যা আসফিয়াকে সাথে নিয়ে যান। বাবার বাড়ির প্রতিবেশি আ. ছোবহানের জামাতা রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়া পাওনা টাকা চাইতে বিলকিছ আক্তারের কাছে যান। দীর্ঘ সময় কথা বলার এক পর্যায়ে শিশু আসফিয়াকে রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়ার সাথে একটি ঘরে রেখে বিলকিছ আক্তার বাইরে চলে যান।

এ সময় বাবুল মিয়া শিশু আসফিয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে বাবুল মিয়া পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় মাতব্বর আব্দুল আওয়াল, কায়েম উদ্দিন বেপারী, সলিম উদ্দিন সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়াকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেন। এ বিষয়ে বাসাইল থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহন করেনি বলে হেমা আক্তার দাবি করেন।

হাবলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম, ইউপি সদস্য মো. পলাশ মিয়া জানান, শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি তারা শুনেছেন। এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ না থাকায় তারা কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন নি।

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এসএম তুহীন আলী জানান, পরকীয়ার কারণে সংসার ভেঙে যাওয়ায় শিশু কন্যাকে হেমা তার কাছে নেওয়ার চেষ্টায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলেন। মূলত এ ধরণের কোন ঘটনা ওই এলাকায় ঘটেনি।

(আরকেপি/এসপি/এপ্রিল ১৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test