E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টিভির পাঠদানে স্কুলের পরীক্ষা বাড়িতে নেওয়ার উদ্যোগ

২০২০ মে ০৪ ১৭:২৯:৪৬
টিভির পাঠদানে স্কুলের পরীক্ষা বাড়িতে নেওয়ার উদ্যোগ

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সয়া-চাকতা গ্রামে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির পাঠদানের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুলের পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেবে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফি দেওয়ার পর বাড়িতে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। উত্তর লিখে খাতা স্কুলে জমা দেবে শিক্ষার্থীরা। কতিপয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এভাবে পরীক্ষা নেওয়ার বিরোধিতা করায় বিষয়টি জেলায় ‘টক্ অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়েছে। তরে জেলা ও উপজেলা  শিক্ষা অফিসার এ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। 

স্কুল সূত্র জানায়, অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার পর বিদ্যালয় থেকে ১৫ জন স্কাউট সদস্যের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রশ্ন দেখে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে উত্তরপত্র তাদের কাছেই রাখা হবে। নির্ধারিত সময়ের পর উত্তরপত্রগুলো সংগ্রহ করে বিদ্যালয়ে আনা হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৬০ টাকা এবং নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ৭০ টাকা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে পরীক্ষার ফি নেওয়া হয়েছে। এ সময় দু-একটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রও তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়ের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে সংসদ টিভির পাঠ্যক্রমের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগকে তারা ইতিবাচক বলে মনে করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক শিক্ষার্থী জানান, করোনার ঝুঁকির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকায় পাঠ্যক্রম চালানো সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে প্রশ্নপত্র আদান-প্রদান করা ব্যক্তির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। এমতাবস্থায় পরীক্ষা গ্রহন করা অযৌক্তিক বলে দাবি করেন তারা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য(বাঘিল ইউপি) মুকুল হোসেন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় ক্লাস হয়নি। পাঠ্যক্রম না চালিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হলে শিক্ষার মান নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হক বলেন, পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে স্কুল পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩৮ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ফি জমা দিয়ে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেছে। বাকিদের প্রশ্নপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি জানেন।

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহীন আশরাফি বলেন, অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় একটি ব্যতিক্রম ও ভালো উদ্যোগ গ্রহন করেছে। সংসদ টিভিতে যে পাঠদান করা হয়, সেই বিষয়ের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের চর্চার পাশাপাশি মূল্যায়নটাও যাচাই করার সুযোগ পাবে।

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ সময়ে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা গ্রহনের যে উদ্যোগ নিয়েছে তা শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগ বাড়াবে। সংসদ টিভির পাঠ্যক্রমের আলোকে পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।

(আরকেপি/এসপি/মে ০৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test