E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাইবান্ধায় মেসের ভাড়া পরিশোধের চাপে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

২০২০ মে ০৭ ১২:০৩:৫১
গাইবান্ধায় মেসের ভাড়া পরিশোধের চাপে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় গাইবান্ধা শহরের মেসগুলো থেকে প্রায় দেড় মাস আগে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে গেলেও এখন মালিকরা ভাড়ার জন্য তাদের চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় দেড়মাস ধরে মেস বন্ধ। তারা বাড়িতে অবস্থান করছে। কিন্তু এপ্রিল ও মে মাসের ভাড়ার জন্য তাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই ফোন করা হচ্ছে; বিকাশে টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে। টাকা না পাঠালে পরবর্তীতে ভাড়া না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট এলাকার এক ছাত্র বলেন,“আমি গাইবান্ধা সরকারি কলেজে পড়ি। বাড়ি থেকে কলেজে যাতায়াত সমস্যা। তাই মেসে থাকি। আমরা দুই ভাই দুই বোন। সবাই লেখাপড়া করি। বাবা একজন কৃষক। সংসারের আয় দিয়ে সবার পড়ার খরচ দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি একবেলা প্রাইভেট পড়িয়ে মেস খরচ চালাই। কিন্তু মেস বন্ধ থাকায় প্রাইভেটও বন্ধ। ভাড়ার জন্য মালিক এ পর্যন্ত ৭ বার ফোন দিয়েছেন। কিভাবে ভাড়া দেব। চিন্তায় পড়েছি।”

একই এলাকার আরেক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমি গাইবান্ধা সরকারি কলেজে অনার্সে পড়ি। বাড়ি থেকে কলেজ অনেক দূর। বাবা কোনমত পড়ার খরচ দেন। মেস ভাড়া দেবার সামর্থ বাবার ছিলনা। আমার সমস্যার কথা ভেবে এক আত্মীয়ের সাহায্যে মেসে থাকি।

“কিন্তু দেড়মাস ধরে মেস বন্ধ। অথচ মালিক ভাড়ার জন্য তিনবার ফোন করেছেন। মেসে থাকিনি। তারপরও আত্মীয়ের কাছে কিভাবে ভাড়ার টাকা চাইব। লজ্জায় পড়েছি।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এক ছাত্রী বলেন, “সুন্দরগঞ্জ থেকে গাইবান্ধার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। এখান থেকে গিয়ে সরকারি মহিলা কলেজে প্রতিদিন যাওয়া সম্ভব নয়। তাই জেলা শহরের একটি মহিলা মেসে থাকি। কিন্তু দেড়মাস ধরে মেস বন্ধ। বাড়িতে আছি।

“অথচ মেস মালিক আমার বাবার কাছে ভাড়ার জন্য ফোন করেছেন। আমার বাবা রিকশা চালায়। লকডাউনের কারণে রিকশা বন্ধ। আয় নেই। সংসারই চলছে না। মেসভাড়া কিভাবে দেব।”

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, “আমরা মেসগুলো ফাঁকা করতে বলেছি। শিক্ষার্থীরা ২৬ মার্চের পর মেস বাড়ি ছেড়েও দিয়েছে। দেড়মাস ধরে তারা মেসে নেই। মানবিক কারণেই মেস মালিকদের দুই মাসের ভাড়া মওকুফ করা উচিত। প্রয়োজনে পুলিশের পক্ষ থেকে মেস মালিকদের ভাড়া মওকুফের জন্য বলা হবে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেস বাড়ি মালিক বলেন, “ভাড়া না নিয়ে কি করবো। মেস বাড়ি ভাড়া দিয়ে আমার উপার্জন হয়।”

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, “মেসভাড়া মওকুফের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদন পেয়েছি। কিন্তু মেসগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। এখানে প্রশাসনের করনীয় কিছু নেই। তবে মেস বাড়ি মালিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা যেতে পারে।”

(এস/এসপি/মে ০৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test