E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে ক্লিনিক মালিকের হাতে অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যু

২০২০ মে ২২ ১৩:৫৬:০৫
বরিশালে ক্লিনিক মালিকের হাতে অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যু

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদীতে আনোয়ারা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মালিক হেদায়েত উল্লাহর ভুল চিকিৎসার কারণে অপারেশন থিয়েটারে গর্ভের সন্তানসহ এক সন্তানের জননী আফরোজা আক্তার মুন্নী নামের এক গৃহবধূর করুণ মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মৃত ওই গৃহবধূর উপজেলার উজিরপুরের শোলক ইউনিয়নের দত্তেশ্বর গ্রামের মোঃ কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী।

মৃতের মা ও স্বামী কুদ্দুস তালুকদার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে প্রসব বেদনা উঠলে ওই গৃহবধূকে গৌরনদী উপজেলার আনোয়ারা কিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ সময় ওই কিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবি করে ওই গৃহবধুর দ্রুত সিজার করানোর কথা বলেন।রোগীর স্বজনেরা তাতে রাজি হলে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাঈদ মো. আমরুল্লাহকে বিশেষজ্ঞ সার্জন পরিচয় দিয়ে কিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ ফোনে ডেকে আনেন।

ওই দিন দুপুরে ওই গৃহবধুকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য অপরেশন থিয়েটারে নিলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাঈদ মো. আমরুল্লাহ উপস্থিতিতে কিনিক মালিক হেদায়েত উল্লাহ রোগীকে অচেতন করার জন্য মেরুদন্ডে এনেস্থেশিয়া ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশের কিছুক্ষণের মধ্যেই গর্ভের সন্তানহস গৃহবধু আফরোজা আক্তার মুন্নি (২৩) অপারেশন থিয়েটারে মারা যায়।

আনারি ডাক্তার পরিচয়ধারী কিনিকের মালিক রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রোগীর অবস্থা খারাপ বলে মৃত কৗশলে ওই গৃহবধূকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এ্যামবুলেন্স রেডি করেন। নার্সদের মাধ্যমে রোগীর মৃত্যুর খবর জানতে পেরে স্বজনেরা পুরো কিনিক অবরুদ্ধ করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই নিজেকে ডাক্তার দাবি করা কিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ ও ডা. সাঈদ মোঃ আমরুল্লাহ কৌশলে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে গিয়েই তারা প্রশাসন ও সাংবাদিক ম্যানেজে মরিয়া হয়ে ওঠে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী মো. কুদ্দুস তালুকদার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার গৌরনদী মডেল থানায় হেদায়েত উল্লাহ, তার স্ত্রী নার্স পরিচয়ধারী শামীমা ইয়াসমীন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট অজয় হালদার, ওয়ার্ডবয় রিপন মিস্ত্রীসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩/৪জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন, নং- ১২(২১.৫.২০)। পুলিশ কিনিকে গিয়ে গৃহবধুর লাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা অভিযোগে জানান, আনোয়ারা কিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিক হেদায়েত উল্লাহ পার্শ্ববর্তী বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগেও এক রোগীর অপারেশন করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল ওই কিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ।

গৌরনদী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম ছরোয়ার মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পুলিশ নিহত গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য শুক্রবার বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।

(টিবি/এসপি/মে ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test