E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত

গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় কিস্তি আদায়ে মরিয়া এনজিও কর্মীরা

২০২০ জুন ০৮ ১৮:৪৬:৪০
গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় কিস্তি আদায়ে মরিয়া এনজিও কর্মীরা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় সরকারী সিদ্বান্ত অমান্য করে অধিকাংশ এনজিও’র মাঠকর্মীরা ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঋণ গ্রহীতারা। ফলে, এখনও কাজে যোগদান করতে না পারায় ঋণ গৃহীতা দিনমজুর পরিবারের মধ্যে চরম হতাশা ও আতংক দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ঋণ গৃহীতারা অভিযোগে বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে চরম আতঙ্কের মধ্যে একদিকে আমরা যেমন কর্মহীন হয়ে পড়েছি, তেমনি করোনা থেকে নিজেদের বাঁচাতে সরকারের নির্দেশে ঘরে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এরই মধ্যে জুন পর্যন্ত ঋণের কিস্তির টাকা আদায় না করার সরকারী সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এনজিও’র মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাঁপ প্রয়োগ করে আসছে। একারণে অনেকেই এনজিও কর্মীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অসুস্থ দোকানদার আইউব আলীর স্ত্রী সাহেদা বেগম (৫০) অভিযোগ করেন, তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্র্যাক, আশা, কারসা, পদক্ষেপ, ব্যুরো বাংলাদেশ ও জাগরনী চক্র নামের কয়েকটি এনজিওর কাছ থেকে ৯ লক্ষাধিক টাকা লোন নিয়ে একটি দোকানে ব্যবসা করে আসছেন। মহামারী করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এদিকে এনজিওর তরফ থেকে কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, গত ৩১ মে সকালে জাগরনী সংগঠনের এরিয়া ম্যানেজার সোহাগসহ অন্যান্য এনজিওর কর্মীরা আমাদের বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।

মাঠকর্মীদের চাপ সইতে না পেরে আমার স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষনিক তাকে (আইউব) বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৩দিন চিকিৎসার পরেও আমার স্বামীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে নাম কেটে দেয়া হলে স্বামীকে বাড়িতে নিয়ে আসি। আমার স্বামী অসুস্থ জেনেও এনজিওর কর্মীরা প্রতিদিন বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে সাহেদা বেগম অভিযোগ করেন।

গেরাকুল গ্রামের ঋণ গৃহীতা রিকশা চালক হেলাল বেপারী ও কালাম শিকদার বলেন, করোনার ঝুঁকির মধ্যেও প্রতিদিন পরিবারের সদস্যদের আহারের জন্য বের হয়ে আগের মতো আয় রোজগার হচ্ছে না। বর্তমানে তেমন কোন লোক রাস্তায় বের হচ্ছেন না। আগে রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশ’ টাকা আয় হলেও এখন সারাদিনে একশ’ টাকা আয় হচ্ছে না। এ অবস্থায় এনজিও’র মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাঁপ দিয়ে যাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের আয়-রোজগার নেই বললেই চলে। তাই কিস্তির টাকা এখন কিভাবে দিবো বিষয়টি মাঠকর্মীদের বার বার বলা সত্বেও তারা তা মানছেন না।

আগৈলঝাড়ার কুয়াতিয়ারপাড় গ্রামের অবিনাশ সমদ্দার জানান,তার বাড়িতে ব্র্যাক এনজিও কর্মীরা ঋণের কিস্ত আদায়ের জন্য বসে থাকে। উপয়ন্তনা পেয়ে ঋণ গ্রহীতারা বাড়ি থেকে কৌশলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান বলেন, সরকার আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিওগুলোকে কিস্তির টাকা আদায় না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নির্ধারিত তারিখের আগেই মাঠ পর্যায়ে কিস্তি আদায় কিংবা চাঁপ প্রয়োগের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/জুন ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test