E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এক মাসে ১৭ দুর্ঘটনায় নিহত ২

সড়ক তো নয়, ধান মাড়াই-শুকানোর চাতাল

২০২০ জুন ১৯ ১৬:৪৫:২৫
সড়ক তো নয়, ধান মাড়াই-শুকানোর চাতাল

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী-মধ্যপাড়া-রংপুর জাতীয় মহাসড়কটি এখন কৃষকদের ধান-ভূট্টা মাড়াই ও খড় শুকানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। সড়কের ওপর সারিসারি ধানের পালা। সারাক্ষণ ধান ও ভুট্টা মাড়াই চলছে। সড়কজুড়ে শুকানো হচ্ছে ভূট্টা, ধান ও খড়। এতে প্রতিনিয়ত ছোটবড় দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে টেম্পো, অটো রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বাইসাইকেল আরোহীরা।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর ভূট্টা ও বোরো মৌসুম (মে-জুন) এই দু’মাস সড়কটি সড়কের আশপাশের গ্রামের কৃষকদের দখলে থাকে। সড়কটির ফুলবাড়ী থেকে মধ্যপাড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে গত বছর ১৫ থেকে ২০ জন দুর্ঘটনায় হরাহতের শিকার হয়েছেন। এ বছর এক মাসে ১৭টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও অন্তত ২৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফুলবাড়ী থেকে মধ্যপাড়া পর্যন্ত অন্তত ১৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে দলদলিয়া ডাঙ্গাপাড়া, মহেষপুর, তেতুলিয়া, চিলাপাড়া, ভাগলপুর, ভালকা জয়পুর, মহিষবাতান, রসুলপুরসহ প্রায় ১০ গ্রামের কৃষকেরা পুরো সড়কটি দখলে নিয়ে মাঠ থেকে ধান কেটে মহাসড়কের ওপর পালা করে যন্ত্র দিয়ে ধান মাড়াই করছেন। ধান মাড়াই শেষে সড়কজুড়ে ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। এতে বিশাল প্রশস্তের মহাসড়কটি এখন সরু সড়কে পরিণত হওয়ায় সেই সরু সড়কের ফাঁক ফোঁকড় দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে ছোটবড় যানবাহন। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বড় যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ায় এই হতাহতের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে।

জিয়ার মোড় নামক স্থানের কৃষক নূরল ইসলাম বলেন, আগেরমত বাড়ির সামনে মানুষজন ফাঁকা জায়গা ফেলে রাখে না বলে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর জায়গার অভাবে বাধ্য হয়েই মহাসড়কের ওপরই ধান-ভূট্ট মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ করতে হচ্ছে।

মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনির ঠিকাদার শাহিন হোসেন, বিপুল চৌধুর ও শিবলী সাদিক বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে দিনের ৩ থেকে ৪ বার কঠিন শিলাখনিতে যাতায়াত করতে হয় মোটরসাইকেলে। মহাসড়কের বর্তমান অবস্থার কারণে বাড়ি থেকে বের হলে মনে হয় না যে, সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারবেন কী না?

মাইক্রোবাস চালক সঞ্জিত প্রসাদ, মো. আলম ও জাকির হোসেন বলেন, এ মহাসড়কটিতে ধানকাটা মাড়াই মৌসুমে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপথনের বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সড়ক আইনে বলা আছে মানুষ ও যানবাহন চলাচল ছাড়া ব্যক্তিগত কোন কাজে সড়ককে কেউই ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালীসহ প্রান্তিক চাষিরা তাদের জমির ধান কেটে সড়কের ওপর মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। বারংবার নিষেধ করার পাশাপাশি এই প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য বেশ কয়েকজনকে সড়ক বিভাগ থেকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

(এসিজি/এসপি/জুন ১৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test