E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপরে ব্রহ্মপুত্রর পানি, গাইবান্ধার ৪০ গ্রাম প্লাবিত

২০২০ জুন ২৮ ১৭:১৮:৪৮
বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপরে ব্রহ্মপুত্রর পানি, গাইবান্ধার ৪০ গ্রাম প্লাবিত

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : একদিকে করোনার মহামারি অন্যদিকে বন্যার পানি, ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার নদী অঞ্চলের মানুষ। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গাইবান্ধায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও অপরদিকে তিস্তা, ঘাঘট ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

এ বর্ষা মৌসুমে চলমান বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধা জেলায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ২৮ জুন রবিবার গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে ফুলছড়ি-গাইবান্ধা আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর এখন হাঁটু পানি উঠেছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু নতুন নতুন গ্রাম। ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত নিম্নাঞ্চল ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা ও বালাসী ঘাট এলাকার ১৫টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হওয়া মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চপুন্ডির, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তিস্তা ও ঘাঘট নদীবেষ্টিত সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার চার উপজেলার ৪০টিরও বেশি গ্রাম আজ পানি বন্দি। তবে জেলায় মোট পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা বা তথ্য এখনও জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাতে পারেনি ।

পানি বন্দি বন্যা কবলিতরা জানান,জেলার ফুলছড়ি উপজেলার সৈয়দপুর ঘাট এলাকায় গত বছর পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে এবারো বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে বালাসীঘাটের ওয়াপদা বাঁধের পূর্ব এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি । এছাড়াও গাইবান্ধা-বালাসী সড়কও তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় ঝুঁকির মুখে রয়েছে ওয়াপদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বাঁধের বিভিন্ন অংশে ইঁদুরের গর্তসহ দেখা দিয়েছে ছোট বড় ফাঁটল। পানির স্রোতে বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই এলাকার লোকজনের মাঝে বন্যা ও নদী ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে ব্যাপক ভাবে। বসতবাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় গবাদিপশু নিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েছেন। তাই তারা নিরাপদ স্থানে অস্থায়ী বসতি গড়েছেন। বসতবাড়ীর পাশাপাশি পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। সাঘাটায় বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকিতে পড়েছে বলে দাবী করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ।

(এসআই/এসপি/জুন ২৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test