E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আশাশুনিতে বেতনা-মরিচ্চাপ নদীর চর জবরদখল, বাধাগ্রস্ত হবে সবুজায়ন প্রকল্প

২০২০ জুন ২৯ ১৩:৪৮:৫৬
আশাশুনিতে বেতনা-মরিচ্চাপ নদীর চর জবরদখল, বাধাগ্রস্ত হবে সবুজায়ন প্রকল্প

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার চাপড়ায় বেতনা, মরিচ্চাপ ও খোলপেটুয়া নদীর চর দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে বাধাগ্রস্ত হবে সরকারের সবুজায়ন প্রকল্প।

স্থানীয়রা জানান, বুধহাটা ইউনিয়নের কেয়ারগাতি খেয়াঘাটের পাশ থেকে মহেশ্বরকাটি বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি ১৯৯৯ সালে তৎকালিন সাংসদ ডাঃ মোখলেসুর রহমানের সময়ে ইট সোলিং করা হয়। বেতনা নদীর বেড়িবাঁধের উপর নির্মিত ওই রাস্তার পশ্চিম পাশ দখল করে কতিপয় ভূমিহীন নামধারী লোকজন বসতি গড়ে তোলেন। বাঁধের পাশের মাটি কেটে ঘরবাড়ি বানানোর ফলে রাস্তাটি ক্রমশঃ ভাঙতে শুরু করে। বর্তমানে রাস্তার ওই অংশ মানুষ ও যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে উঠেছে।

ভূমিহীন নামধারী লোকজনের মধ্যে ইলিয়াস, সাত্তার, লিটন, নাজমা, বাবুলসহ ২৪জন ২০১৮ সাল থেকে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদীর চর দখল করতে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির পরামর্শে খুপড়ি ঘর বানায়। অনেকেই জমি দখলে রাখতে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। ওই জমির ডিসিআর করিয়ে দেওয়ার নাম করে ওইসব ভূমিহীনদের কাছ থেকে ওই জনপ্রতিনিধি নিয়েছেন চার থেকে প^াঁচ হাজার করে টাকা। ভূমিহীন নামধারী ভূমিদস্যুরা মৃতপ্রায় বেতনা, মরিচ্চাপ ও খোলপেটুয়া নদীর চর দখলে বেপরোয়া হয়ে ওঠায় সাধারণ মানুষের বিলের জমির পানি নিষ্কাশনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই দেওয়া হচ্ছে হুমকি।

সরেজমিনে রবিবার কেয়ারগাতি খেয়াঘাটের পাশে ত্রিমোহিনী নামকস্থানে গেলে রজব আলী, শহীদুল ইসলাম, আলম গাজীসহ কয়েকজন, বেতনা নদীর চরে ১নং খাস খতিয়ানের ৭০৪ দাগে কয়েকটি খুপড়ি ঘর দেখিয়ে বলেন, ইলিয়াস, নাজমা, লিটনসহ ২৪ জন ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ৫ থেকে ৭ কাঠা করে জমি দখল করে সেখানে খুপড়ি ঘর বানিয়ে নামমাত্র বসবাস শুরু করেন। বাবুলসহ কয়েকহ জমি দখলে রাখতে বেড়া দিয়ে কয়েকটি করে গাছের চারা পুতেছেন। বর্ষায় বিলের পানি বা ঘেরের পানি পাইপের মাধ্যমে সরনোর চেষ্টা করা হলে ওইসব ভূমিহীন নামধারী ভূমিদস্যু তাদেরকে বাধা দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে চরদখলকারি ইলিয়াস হোসেন, লিটন, নাজমাসহ কয়েকজন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেবের কথামত তারা বেতনা ও মরিচ্চাপ নদীর চরে ২০১৮ সাল থেকে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। চেষ্টা করছেন ডিসিআর নেওয়ার। অন্যত্র বাড়ি থাকার পরও কেন নদীর চর দখল করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, বড় বড় জনপ্রতিনিধিরা শত শত বিঘা নদীর চর দখল করে ইটভাটা ও চিংড়ি ঘের করলে অন্যায় হয় না, অন্যায় শুধু তাদের বেলায়?

বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোছাদ্দেক আলী সাংবাদিকদের বলেন, মধ্য চাপড়ার কেয়ারগাতি খেয়াঘাটের কাছে কিছু অসহায় ভূমিহীন কয়েক বছর ধরে বসবাস করে। সম্প্রতি স্থানীয়দেও সঙ্গে তাদেও একটি বিরোধকে ঘিরে তার পরিষদে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। আগামি ২ জুলাই উভয়পক্ষকে শালিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

বুধহাটা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার মোকারম হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, কেয়ারগাতি খেয়াঘাটসহ বেতনা, মরিচ্চাপ ও খোলপেটুয়া নদীর চরে ভূমিহীন নামধারী কিছু লোকজন বসবাসের নামে জবরদখল করেছেন। ওই চরে বেসরকারি সংস্থা ফ্রেণ্ডসশীপ নামে খুলনার একটি পরিবেশবাদি সংগঠণের মাধ্যমে লবণসহিষ্ণু কেওড়া ও ধুন্দুল জাতীয় গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চারা হাতে পেলে জবরদখলকারিদের উচ্ছেদ করে খুব শ্রীঘ্রই ওই চরে সবুজ বনায়নের কাজ শুরু করা হবে।

(আরকে/এসপি/জুন ২৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test