E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত না হওয়ায় শহীদ পরিবারের ক্ষোভ

২০২০ জুলাই ০১ ১৪:৪৩:৫৩
২৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত না হওয়ায় শহীদ পরিবারের ক্ষোভ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : মহান মুক্তিযুদ্ধে তাড়াশে ২৫জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সরকারী ভাবে তালিকা ভুক্ত না হওয়ায় ওই পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও শহীদ পরিবারের ভাগ্যে আজও কোন সরকারী সহযোগিতা জোটেনি। 

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে তাড়াশের নওগাঁয় গড়ে উঠে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির নামে মুক্তিযুদ্ধের একটি সংগঠন। সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা নেতৃত্বে গড়ে উঠে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির। ১৯৭১সালের ১১নভেম্বর পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ওই যুদ্ধে শতাধিক পাক হানাদার বাহিনী নিহত হয়। পাক সেনারা নিহত হবার পরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ত্রাসের সৃষ্ঠি করে। পাক হানাদার বাহিনী তাড়াশের মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।

ওই গ্রামের ইয়ার মাহমুদ মাস্টার সহ ১৫ জন আগুনে পুড়ে মারা যায়। ১২ নভেম্বর তাড়াশে পাক বাহিনী তান্ডব শুরু করে। পাক হানাদার বাহিনী হীরা লাল গোস্বামীর বাড়িতে হানাদেন। হীরা লাল গোস্বামী নিজেই পাক হানাদার বাহিনীর ২জন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাক বাহিনী ও রাজাকারা মিলে হীরা লাল গোস্বামীকে হত্যা করে। নওগাঁ যুদ্ধের পর পাক হানাদার বাহিনী উলিপুর গ্রামের ওসমান গনি, দিঘী সগুনা গ্রামের মতিয়ার রহমান, মাগুড়াবিনোদ গ্রামের মাহতান উদ্দিন খান, আমবাড়িয়া গ্রামের ইয়ার মাহমুদ, মোক্তার হোসেন, আব্দুর রহমান, মেহের আলী মন্ডল, সুলতান সেখ, ফজলার রহমান, সফিজ উদ্দিন, কিয়ামত আলী প্রাং, মজিবর রহমান,ওসমান আলী প্রাং, দেছের আলী প্রাং, আমিন উদ্দিন প্রাং, জুব্বার ফকির, তাড়াশ গ্রামের হীরা লাল গোস্বামী, মহাদেব চন্দ্র সাহা, দীনেশ চন্দ্র সিংহ, শচীন্দ্র নাথ ঘোষ, সত্যদাস, জমসের আলী, আমজাদ হোসেন, রমনী বালা সাহা এবং কাস্তা গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে নিহত হলেও আজ পর্যন্ত ওই সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা সরকারী ভাবে স্বীকৃতি পায় নাই এবং সরকারী তালিকা ভুক্ত হয় নাই। তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার গাজী আরশেদুল ইসলাম আরশেদ বলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বার বার মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হলেও আজ পর্যন্ত তারা তালিকা ভুক্ত হয়নি। ওই সময় তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে নিঃশ্ব করে দেওয়া হয়েছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সাবেক কমান্ডার গাজী আব্দুর রহমান মিঞা বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সরকারী ভাবে সহযোগিতা করা উচিত। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের দাবী দেশের স্বাধীনতার জন্য আমার পিতা জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত তারা সরকারী ভাবে তালিকা ভুক্ত হতে পারেন নাই।

(এমএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test