E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্রের নীরবতা

২০২০ আগস্ট ১৮ ২০:৩২:২৮
আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্রের নীরবতা

সজীব কিস্কু : আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার নিরসন হলেই আলফ্রড সরেনের মত জঘন্যতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ড অনেকাংশে কমে যাবে। ১৮ আগষ্ট নওগাঁর আদিবাসী ভূমি রক্ষা আন্দোলনের নেতা আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ডের ২০ বছর হয়ে হল।

রাষ্ট্রের নীরবতায় বিচারবহির্ভৃত এই হত্যাকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে এতদিন। ২০০০ সালের এই দিনে জনসম্মুখে দিবালোকে রীতেষ ভট্টাচার্য গদাই ও হাতেম আলী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যুচক্রের শিকার হয় আলফ্রেড সরেন। তার সাথে সাথে ঐ গ্রামের অনেক আদিবাসী পরিবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। ঐ ঘটনায় আলফ্রেড সরেনের বড় ভাই কমল সরেন হত্যা ও জননিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। খুবই ধীরগতির চলা মামলা চলাকালীন সময়েই ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে জননিরাপত্তা আইনটি বাতিল হয়। ফলে আসামিদের হাইকোর্টে রিট পিটিশন ও আইন বাতিলের মধ্য দিয়ে জামিন পেয়ে সরেনের পরিবারকে হুমকি ধমকি দিতে থাকে যা ঐ পরিবারসহ আদিবাসীদের চরম নিরাপত্তহীনতায় ভুগাচ্ছে। রাষ্ট্রের নিরব ভূমিকায় আলফ্রেডসহ আদিবাসীদের প্রতি বৈষম্য চরম রূপ ধারণ করেছে। অতিদুঃখের সাথে বলতে হয় ৭২ এর সংবিধানেই আদিবাসীদের প্রতি বৈষম্যের সূত্রপাত ঘটে। যেখানে আদিবাসীদের আত্মপরিচয়কে হরণ করে সাত কোটি বাঙালির সাথে একত্রিত করে বাঙালি বলে আথ্যায়িত করা হয় সেখানে প্রমাণিত হয় রাষ্ট্রে আদিবাসীদের প্রতি তথা সরেনের মত ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কতটুকু প্রশ্রয় দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য বিষয় সংবিধানে আদিবাসীদের অস্বীকার ও তাদের অধিকারগুলোকে নিশ্চিত না করার মাধ্যমেই আদিবাসীদের প্রতি এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক স্বাধীন ভৃমি কমিশন গঠন না করলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। কারণ আদিবাসীদের প্রতি ঘটে যাওয়া সুপরিকল্পিত ঘটনাগুলো অধিকাংশই ভূমিকেন্দ্রিক। আদিবাসীবান্ধব রাষ্ট্র হয়ে অবশেষে দিন গোনার অবসান হোক। আদিবাসী স্বীকৃতি, পৃথক ভূমি কমিশন গঠন ও আলফ্রেড সরেনসহ অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হোক।

(এসকে/পি/আগস্ট ১৮, ২০২০ইং)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test