E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কমলগঞ্জে দলই কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি 

২০২০ আগস্ট ২৪ ২২:৫৫:১৩
কমলগঞ্জে দলই কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি 

মো. আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : কমলগঞ্জের সীমান্তবর্তী দলই চা বাগানের শ্রমিকসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপর বাগান কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মিথ্যা মামলার প্রতিবাদের ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে কমলগঞ্জ উপজেলার দলই চা বাগান থেকে পায়ে হেটে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

সোমবার (২৪ আগস্ট) দলই চা বাগানের সর্বশেষ ইস্যুতে প্রায় পাঁচ-ছয়শত চা শ্রমিক সকাল থেকে জরো হয়ে নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। এরই অংশ হিসেবে তারা প্রায় বিশ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক শ্রমিকদের অবস্থান বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চা শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত তাদের কোন প্রতিনিধি আমার সাথে দেখা করেননি কিংবা কোন আলোচনাও হয়নি।

এর আগে গত ২২ আগষ্ট শনিবার রাতে দলই চা বাগানের এজিএম খালেদ মঞ্জুর খান বাদী হয়ে মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, চা শ্রমিক নেতাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন কমলগঞ্জ থানায়। মামলা এজিএম এর গাড়ি গতিরোধ করে মারপিট, গাড়ি ভাঙ্গচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে, দুই নারী শ্রমিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ নিয়ে শ্রমিকরা কমলগঞ্জ থানায় গেলেও তাদের মামলাটি নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে দলই চা বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক সেতু রায় বলেন, ‘এজিএম কতৃক দুই নারী চা-শ্রমিক লাঞ্চিত হয় গত ১৯ আগস্ট। আমরা মামলা দিতে গেলেও আমাদের মামলাটি নেয়া হয়নি। উল্টো দলই চা-বাগান কর্তৃপক্ষের মামলা নিয়েছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মধ্যস্থতায় দলই চা-বাগানে স্বাভাবিক কার্যক্রম ১৯ আগস্ট থেকে চালুর সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘদিন পর দলই চা-বাগানের উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় সচল হওয়ায় তিনি (এজিএম খালেদ মঞ্জুর খান) কোম্পানির সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে ১৯ আগস্ট সকাল ১১টায় তদারকি কাজে চা-বাগানে গিয়েছিলেন। সে সময় চা-বাগানের ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপকসহ বাগানের সব কর্মচারীর জুলাই মাসের বেতন ও মজুরি পরিশোধের জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে যান তিনি। তখন মামলার সব আসামিরা লাঠি, লোহার রড নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে কোম্পানির জিপ গাড়ির গতিরোধ করে। সে সময় এক নম্বর আসামির নির্দেশে বাকি আসামিরা গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করে।

আসামিরা তাকে জোরপূর্বক টেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে জখম করে। আসামিরা গাড়িতে রাখা ব্যাগের ভেতর রাখা ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আসামিরা একটি নোহা মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে যায়। পরে তিনিসহ আহতরা মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং ঘটনার দুই দিন পর শনিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

কমলগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে কমলগঞ্জ থানার এসআই সিরাজুল ইসলামকে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী বলেন, বর্তমানে শ্রমিকরা উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করলেও এখনো নতুন কোন কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়নি। তিনি বলেন, শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে আগামীকাল এবিষয়ে ত্রিপক্ষীয় একটি সমঝোতা বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

(একে/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test