E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোবিন্দগঞ্জে অর্ধ কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

২০২০ আগস্ট ২৫ ১৯:০৬:১২
গোবিন্দগঞ্জে অর্ধ কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সামাজিক বনায়নের অর্ধ কোটি টাকা মুল্যের ১ হাজার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হলে তারা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পুনঃ দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলোর প্রকৃত মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশ থেকে বাজুনিয়াপাড়া চৌমাথা বটতলা গামার গেট পর্যন্ত সড়কের দু'পাশে ১৫ বছর আগে ১হাজার ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়। কান্টু ওয়ান নামে একটি সমিতির সদস্যদের গাছগুলো দেখ-ভালের দায়িত্ব দেয়া হয়। রংপুর বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী কান্টু ওয়ান সমিতির বিল্লুসহ ৩০ সদস্যের তত্ত্বাবধানে সামাজিক বনায়নের গাছগুলো বেড়ে উঠতে থাকে। সড়কের শোভাবর্ধনকারী গাছগুলো ১৫ বছর পর পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বন বর্মকর্তা মিজানুর রহমান সুকৌশলে গাছগুলো নাম্বারিং করে গত মার্চ মাসে টেন্ডার দেন।

করোনা দুর্যোগের মাঝে টেন্ডার প্রকাশ না করে কয়েক মাস পর সুবিধাভোগী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে তিনি মোকামতলা, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীর ৪জন কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে নামমাত্র মূল্যে গাছগুলো বিক্রি করে দেন। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালী দালাল আব্দুল মান্নান, শাহারুল মেম্বার, রশিদ মেম্বার ও মিলুসহ কয়েকজন হঠাৎ করেই রাস্তার ওইসব গাছ কাটতে শুরু করে। এতে সুবিধাভোগীরা বাঁধা দিলে তারা জানতে পারেন, প্রথম তিন লটের জন্য জমা হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৪১ হাজার ৮শ’ টাকা- আর বাকি তিন লটের গাছের সংখ্যা ১৮০টি।

নামমাত্র মূল্যে গাছ বিক্রি করায় সুবিধাভোগীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করেন। এরই ফাঁকে দালালরা তড়িঘড়ি করে গাছগুলো দিনরাত শ্রমিক দিয়ে কাটার চেষ্টা করছে।

স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগীরা জানান, অধিকাংশ গাছের বাজারমূল্য ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা হবে। তাদের ধারণা, এই তিন লটের ১৮০টি গাছের আনুমানিক মূল্য হবে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। আর ১৫টি লট বিক্রি হবে অর্ধকোটি টাকা- সেখানে ফরেস্টার মিজানুর রহমানের যোগসাজশে গাছগুলি মাত্র ১৭ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।

হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী সাজু জানান, ইউনিয়ন পরিষদকে না জানিয়ে উপজেলা বন বর্মকর্তা মিজানুর রহমান নামমাত্র মূল্যে গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর পুনঃ দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগায়োগ করা হলে তিনি বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে- আমার করার কিছু নেই।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কমমূল্যে গাছ বিক্রির বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি- এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসআরডি/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test