E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পুকুর-ডুবায় গিলে খাচ্ছে কেন্দুয়ার ৫৮টি পাকা সড়ক, জনপথ হুমকির মুখে

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৯:০৫:৪২
পুকুর-ডুবায় গিলে খাচ্ছে কেন্দুয়ার ৫৮টি পাকা সড়ক, জনপথ হুমকির মুখে

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : পুকুর ডুবায় গিলে খাচ্ছে এলজিইডি ও সওজের কেন্দুয়া উপজেলার ৫৮টি ছোট বড় পাকা সড়ক। এতে এক দিকে যেমন সড়কের টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে বাধাগ্রস্থ, অপর দিকে এই উপজেলার জনপথ দিন দিনই হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। ৫৮টি পাকা সড়কের মধ্যে এলজিইডির সড়কই বেশি। এসব সড়কের সঙ্গে যুক্ত করে পুকুর ও ডুবা খনন করে মাছ চাষ করার ফলে এসব পুকুর ও ডুবায় দিন দিনই সড়ক ভেঙ্গে পড়ছে। সড়কগুলোর যেসব স্থানে পুকুর ও ডুবা রয়েছে, সেসব স্থানেই পাকা সড়ক ভেঙ্গে পুকুর ও ডুবায় গিয়ে বিলিন হচ্ছে।

এমনও অভিযোগ রয়েছে, সড়কের পাকা করনের কাজ শেষ হতে না হতেই পুকুর ও ডুবা সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় নির্মান কাজ চলাকালীন সময়ই সড়ক ভেঙ্গে পুকুরে বিলীন হচ্ছে। সড়কের পাশের জায়গা যে জায়গাটি সড়ককে রক্ষা করে সে জায়গাটি অবৈধ ভাবে দখল করে নিয়ে তাও খনন করে পুকুর বা ডুবাকে বড় করছে একশ্রেনীর অসাধু মালিকরা ।

তারা সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে পাকা সড়কগুলোর টেকসই উন্নয়নের কথা মোটেও চিন্তা না করে, ব্যক্তি স্বার্থে সড়কের সঙ্গে যুক্ত করে পুকুর ডুবা খনন করে মাছ চাষ করছেন। ৫৮টি পাকা সড়ক গিলে খাচ্ছে পুকুর ডুবা। এ সংক্রান্ত একটি তথ্য চিত্র মাসিক উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলে ধরেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাকির হাসান। তিনি ৫৮টি পাকা সড়ক রক্ষায় যেসব পুকুর ও ডুবা সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত আছে সেসব পুকুর ডুবাগুলোকে অন্তত ১৫ ফুট ভরাট করার প্রস্তাব তুলে ধরেন। ওই সভার সভাপতি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোঃ মইন উদ্দিন খন্দকার।

এ সভায় উপস্থিত ছিলেন, নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র মোঃ আসাদুল হক ভূঞা ও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ইউপিচেয়ারম্যান ও বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ। সড়কের পাশে পুকুর ও ডুবা ভরাট করে সড়ক রক্ষায় সকলেই ঐক্যমত পোষন করেন।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পুকুর ও ডুবায় মাছ চাষ করায় এবং মাছ বড় করার জন্য সার প্রয়োগ করা হয়। পানিতে সার প্রয়োগ করার ফলে মাটি নরম হয়। এতে আরো সড়ক তাড়াতাড়ি ভাঙ্গে। তাই এসবের প্রতিকার করা দরকার।

প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে এমপি অসীম কুমার উকিল বলেন, একটি সড়ক নির্মান বা মেরামতের জন্য সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। জনস্বার্থেই এ সড়কগুলো করা হয়, সুতরাং সড়ক রক্ষায় পুকুর ভরাটে জনগণকেই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, পুকুর ডুবার কারণে দিন দিন সড়কগুলি যে ভাবে ভেঙ্গে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে, সে তুলনায় সংস্কার করার বাজেট বরাদ্দ থাকছে না। তিনি সড়ক সংযোগ পুকুর ডুবাগুলোকে ভরাট করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো: জাকির হাসান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে খুব সহসাই সড়ক রক্ষায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে মাইকে প্রচারের নির্দেশ দেবেন। তাছাড়া প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সামাজিক সংগঠন সহ রাজনৈতিক সংগঠন এবং পুকুর ডুবা মালিকদের চিঠি দিয়ে অবহিত করবেন। এর পর ৫৮টি সড়ক রক্ষায় যদি আইনের কেউ তোয়াক্কা না করেন, সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test