E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩৫ বছরের বসতবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট

সাতক্ষীরার মকবুল পরিবার এখন তাঁবুর নিচে 

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৬ ২৩:৪৩:২২
সাতক্ষীরার মকবুল পরিবার এখন তাঁবুর নিচে 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বৃদ্ধ মা এবং স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে পথে উঠেছেন সাতক্ষীরা পৌরসভার রাধানগরের মকবুল হোসেন। তার বাড়িঘর ভেঙেচুরে গুড়িয়ে লুটপাট করার পর এখন তার শেষ আশ্রয় একটি তাঁবুর নিচে। তিন দিক বেড়া বিহীন রোদ ও বৃষ্টিতে কাটছে দিন ও রাত। এ ঘটনায় আইনগত কোন সহায়তা না পেয়ে মকবুল ও তার পরিবার হতাশ। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

মকবুল হোসেন জানান, প্রায় ৩৫ বছর আগে তার বাবা দাউদ সরদার সাতক্ষীরার কামালনগরের মিরাজ আলীর কাছ থেকে আড়াই শতক জমি ক্রয়ের বায়না বাবদ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এসময় জমির মালিকের মৌখিক সম্মতি অনুযায়ী তিনি রাধানগরের ওই জমিতে থাকা ডোবা ভরাট করে বাড়িঘর নির্মান করে সাড়ে তিন দশকেরও বেশী সময় ধরে বসবাস করে আসছেন।

মকবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তিনি ওই জমির সে সময়কার মূল্য বাবদ বকেয়া ২৫ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন জানালে মিরাজ আলীর ছেলে সালাম, বাসার ও আব্দুস সবুর সহ অন্যরা সেই টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্টো তারা ভাড়াটিয় া গুণ্ডা নিয়ে গত ২৪ মে ও ৬ জুন তার অনুপস্থিতিতে বাড়িঘর ভাংচুর করে। দুইবার অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সর্বশষ গত বুধবার ভোরে ১৪০-১৫০ জন লাঠিয়াল নিয়ে মিরাজ আলীর ছেলেরা, জামাতা সাইফুলকে নিয়ে তার বাড়িতে হামলা করেন। বাড়ির সদস্যদের জোর করে বের করে দিয়ে চার ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে চলে যায়। এসব নিয়ে দফায় দফায় স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠক হলেও মিরাজের ছেলেরা তা মেনে নেয়নি।

এদিকে বসতবাড়িঘর ভাংচুর এবং লুটপাট করার অভিযোগ এনে মকবুল হোসেনের স্ত্রী পারভিন আক্তার বুধবার রাতেই সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা দেন। কিন্তু পুলিশ সে মামলা রেকর্ড করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দেওয়ানি পর্যায়ে পড়ে। প্রতিপক্ষও একটি পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, উভয় পক্ষকে মিমাংসা করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের আদালতের শরনাপন্ন হতে হবে।

মকবুল বলেন, এই মামলা না নেওয়ায় বাড়ি ভাংচুরকারীরা আরও উৎসাহিত হয়েছে। তারা নতুন করে আরও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার পায়তারা চালাচ্ছে। এ ধরণের বরবরোচিত ঘটনা যাতে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ছাপা না হয় সেজন্য হামলাবারিরা পত্রিকা অফিসে ও বিশেষ বিশেষ সাংবাদিকদের কাছে মিষ্টির প্যাাকেট নিয়ে ছুঁটেছেন। সফল ও হয়েছেন তারা। ঘটনার নাটকীয়তার অংশ হিসেবে জমি ছেড়ে চলে যেতে ও মামলা না করার জন্য একজন সাবেক পৌর কাউন্সিলরকে দিয়ে মীমাংসার নামে বাকালের দৌলতপুরে এক শতক জমি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শনিবার হামলাকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মুন্না মকবুলের মায়ের কাছে হামলার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন। একই সময়ে ওই ক্ষমা চাওয়ার দৃশ্য ভিডিও করার পর হুমকি দিয়েছে সালামের জামাতা জেরো সাইফুল।

মকবুল বলেন, তিনি এখন তার বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী পারভিন আক্তার সহ সন্তানদের নিয়ে একটি তাবুর নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি আইনগত সহায়তার পাশাপাশি এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test