E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ইউএনও ওয়াহিদা হত্যা চেষ্টার ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে, দুই গাড়ী চালক আটক 

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৮ ১২:৫৩:০৮
ইউএনও ওয়াহিদা হত্যা চেষ্টার ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে, দুই গাড়ী চালক আটক 

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : চুরির ঘটনায় নয়,দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হত্যা চেষ্টার ঘটনা এখন অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। এঘটনায় ফেসে যাচ্ছেন,একজন শীর্ষ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। নিজের আধিপত্য বিস্তারের কাটা সরাতেই এমন নিকৃষ্ট পথ বেছে নিয়েছিলেন ওই নেতা।যদি প্রভাবিত না হয়, তবে ওই নেতা আটক হবে,এমনটাই মন্তব্য করেছেন,আইন শৃংখলা প্রয়োগকারী দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা। ঘটনা এড়িয়ে যেতে মিডিয়ার সামনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কথিপয় কর্তরা মুখ না খুললেও ইতোমধ্যে সব রহস্য ফাস হয়ে পড়ছে, আসাদুল, নবীরুল এবং সান্টু কুমারকে সাত দিনের রিমান্ডের পর থেকে। 

দিনাজপুর গোয়েন্দা বিভাগের ওসি ইমাম আবু জাফর এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। চৌকস এই পুলিশ অফিসার রিমান্ডের আসামীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। ফলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে এসেছে, ইতোমধ্যে। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরমধ্যে ইউএনও’র গাড়ি চালক মোতালেব হোসেন (৪৫) ও ইয়াসিন মিয়া (৩০) নামের দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার পর তাদেরকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে থানা হেফাজতে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মোতালেব ইউএনও ওয়াহিদার নিয়মিত গাড়ি চালক এবং ইয়াসিন অস্থথায়ী গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আগে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রোববার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার দুই গৃহপরিচারিকাকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন,জবেদা খাতুন (২৮) ও আরসোলা (৩২)।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম আবু জাফর এর নেতৃত্বে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রধান আসামি আসাদুল হক, পরিকল্পনাকারী নরীরুল এবং সেন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনজনের কাছে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে ঘটনার নেপথ্যসহ সব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ চিত্র বের করার চেষ্টা করছেন,তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম আবু জাফর।

ঘটনাটি চুরির বলে দাবি করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম জাফর বলেছেন, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তিনি বিষয়টি দেখছেন।

উপরোক্ত গাড়ী চালক এবং গৃহপরিচারিকা ছাড়াও প্রধান আসামি আসাদুলের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম শাওন, বাগানের মালি সুলতান কবির এবং (গেস্খফতারকৃত সেন্টুর নিকট আত্মীয়) শ্যামল কুমারকে শনিবার থেকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।

তবে, ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই পাঁচজনকে গ্রেফতার অথবা আটক দেখাননি তারা। তথ্য জানতে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাচেষ্টা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও যাদের আটক করা হয়েছে তারা হলেন,উপজেলার বানিয়াল পালশা গ্রামের খোকা শেখের ছেলে মো. শাহজাহান শেখ (৩৫) চক বাসুনিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সোহেল রানা(২৯) মামলার প্রধান আসামি আসাদুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম (৪০), একই গ্রামের সইমুদ্দিনের ছেলে সুলতান (৩২) ও ধীরেন্দ্র নাথের ছেলে শ্যামল চন্দ্র (৩০)।

এই চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি ওসি ইমাম আবু জাফর। আর মামলার বাদী ইউএনওর বড় ভাই শেখ আরিফ হোসেন।

মামলার প্রধান আসামিরা হলেন, যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আসাদুল হক (৩৮) রংমিস্ত্রী নবীরুল ইসলাম (৩৩) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৯) । এই তিন আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

এদিকে ছেড়ে দেয়া বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা জাহাংগীর আলমকে আবারো খুঁজছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এমনি তথ্য দিয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় একজন প্রভাবশালী নেতাকেও আটক করা হতে পারে বলেও সুত্রটি জানিয়েছে।

প্রসঙ্গতঃ গত বুধবার রাত ৩টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test