E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

জকিগঞ্জে প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে, এলাকায় তোলপাড়

২০১৪ আগস্ট ১৬ ১৮:৩০:৩৮
জকিগঞ্জে প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে, এলাকায় তোলপাড়

জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : প্রেমিক নিয়ে সুখের সংসার গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পিতা মাতাকে ছেড়ে সেচ্ছায় পালিয়ে  গিয়েছিল জকিগঞ্জের সুমানা (১৪)। তিন বছরের প্রেমকে সফল করতে নাবালিকা সুমানা পালিয়ে গিয়ে উঠে প্রেমিক রুমেল আহমদের (১৮) বাড়িতে। উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বিলপার গ্রামের বাসিন্দা এই প্রেমিক জুটি।

প্রেমিকের পিতা ফয়জুর রহমানের পায়ে ধরে প্রেমিকা সুমানা আকুতি করে বলে আমার মা আমাকে মারধর করে। রুমেলের সাথে তার তিন বছরের গভীর প্রেমের সর্ম্পকের বিষয়টি প্রেমিক রুমেলের পিতাকে জানায়। ঐদিন রাতে সুমানার চাচীসহ অভিভাবকরা প্রেমিক রুমেলের বাড়ি থেকে তাকে আনতে গেলে সুমানা তাদের সাথে আসতে চায়নি। গত ১৯ মে এ প্রেমিক জুটির এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঐদিন প্রেমিক জুটি প্রেমিকের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে পরদিন সকালে স্থানীয় মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. রায়হানের বাড়িতে গিয়ে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেয়ার দাবি জানায়। উভয়ের বয়স কম হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন। পুলিশ রুমেলকে হাজতে আটক করে রাখে। এক পর্যায়ে প্রেমিকাকে কাছে না পেয়ে প্রেমিক রুমেল হাজতখানার ভিতরে থাকা কম্বল দিয়ে বৈদ্যুতিক বাল্বের ঢাকনার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্ট চালায়। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ প্রেমিক রুমেলকে উদ্ধার করে জকিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে। এদিকে রুমেলের আত্মহত্যার চেষ্টার সংবাদ শুনে তার ফুফু আয়শা বেগম থানায় উপস্থিত হয়ে তার ভাতিজা নির্দোষ দাবী করেন। তিনি পুলিশকে জানান মেয়েটি স্বেচ্ছায় রুমেলের সাথে গিয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে আটক করে। পরদিন প্রেমিকা সুমানার পিতা মাসুক আহমদ বাদী হয়ে রুমেল আহমদ, দুদু মিয়া, আয়শা বেগম, কয়ছর আহমদসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঐদিন প্রেমিক রুমেল ও তার ফুফু আয়শাকে ঐ মামলায় আটক দেখিয়ে জকিগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরনের র্নিদেশ দেন। ২৩ মে জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট আদালতের খাস কামরায় বিজ্ঞ বিচারকের কাছে প্রেমিকা রুমানা বলে সে স্বেচ্ছায় প্রেমিক রুমেলের সাথে গিয়েছে। এদিকে পুলিশ সুমানার পিতা মাসুক আহমদের দায়েরকৃত মামলায় রুমেল আহমদ ও আয়শা বেগমকে অভিযুক্ত করে গত ৩০ জুন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আত্মহত্যার চেষ্টায় রুমেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অপর আরেকটি মামলার চার্জশীট দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকতা এসআই শরীফ উদ্দিন। এদিকে রুমেলের বিরুদ্ধে মামলা ও আটকের পরপর সুমানা তার পিতা মাতার কাছে চলে যায়। কয়েকদিন কারাবাস করে রুমেল ও তার ফুফু আয়শা জামিনে মুক্তি লাভ করে। অভিযোগ ওঠে পহেলা আগষ্ট শুক্রবার রাতে গোপনে ফুফাতো ভাই বারঠাকুরী ইউপির আমলশীদ গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র মুমিন আহমদের সাথে নাবালিকা মেয়ে সুমানার বিবাহ দেয়া হয়। স্থানীয় বিলপার গ্রামের ফরিদ উদ্দিন ফরন, রুবেল আহমদ, জামাল উদ্দিন, লুকমান উদ্দিন, আব্দুল মালিক ও সুমানার পিতা মাসুক আহমদের যোগসাজসে রাতের অন্ধকারে কাবিন বিহীন বিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে রুমেলের পিতা ফয়জুর রহমান অভিযোগ করেন। বিবাহের সাথে সম্পৃক্ত বিলপার গ্রামের মৃত সামছু মিয়ার পুত্র ফরিদ উদ্দিন ফরনের কাছে কৌশলে এ প্রতিবেদক বিবাহের সত্যতা জানতে চাইলে ফরন বিবাহের কথা স্বীকার করেন। স্থানীয় আরও অনেকে বিয়ের ঘটনাটি জানেন বলে জানান। নাবালিকা প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ের ঘটনায় উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে প্রেমিকাকে হারিয়ে প্রেমিক রুমেল দিশেহারা। একদিকে মামলা আর অন্যদিকে প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ের বেদনায় প্রেমিক রুমেল ও তার পরিবার দিশেহারা। প্রেমিক রুমেলের দরিদ্র পরিবার রুমেলের মামলা আপোষ নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে গেলেও প্রতিপক্ষের লক্ষ টাকার দাবি পূরণ করতে না পারায় বিষয়টি সমাধান হচ্ছে না বলে জানান রুমেলের পিতা ফয়জুর রহমান।
(এসপি/এএস/আগস্ট ১৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test