E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সমিতির সুদের টাকা না দেওয়ায় বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাত, আদালতে মামলা

২০২০ সেপ্টেম্বর ২১ ২২:০৭:৪৫
সমিতির সুদের টাকা না দেওয়ায় বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাত, আদালতে মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : করোনাকালিন সময়ে সমিতির সুদের টাকা দিতে না পারার অভিযোগে এক বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাত করে জখম করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিতের ছেলে সুমন রায় গণেশ বাদি হয়ে সোমবার সাতক্ষীরার আমরী আদালত-৩ এ মামলা দায়ের করেন। ভারপ্রাপ্ত বিচারক রাকিবুল ইসলাম পিবিআই এর একজন সহকারি পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে আগামি ২২ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। 

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সুমন রায় গণেশ জানান, দীর্ঘ আট বছর যাবৎ তার বাবা মনোরঞ্জন রায়সহ কয়েকজন মিলে মাঝিয়াড়া গ্রামের কুমারেশ বিশ্বাসের বাড়িতে গ্রামীন সমিতি পরিচালনা করে আসছেন। কুমারেশ বিশ্বাসের স্ত্রী পুষ্প রানী বিশ্বাস ও তার ছেলে মানিক বিশ্বাস সমিতির নির্ধারিত তিন টাকা হারে সুদ নিয়ে অন্যত্র সাত থেকে আট টাকা হারে সুদ খাটাতো।

গত চৈত্র মাসে সমিতির কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলেও তার বাবাসহ কয়েকজন করোনার কারণে সামান্য কিছ চক্রবৃদ্ধিু সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে কুমারেশ বিশ্বাসের স্ত্রী পুষ্প রানী বিশ্বাস ও ছেলে মানিক বিশ্বাস গত ১৬ আগষ্ট সন্ধ্যায় মফিজুলের বাড়ি থেকে পড়িয়ে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার উপর তার বাবার উপর হামলা চালায়। এ সময় তার কাছ থেকে জোরপূর্বক নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সাক্ষর করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় বাবার পরিহিত পাঞ্জাবী। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরদিন তার কাছ থেকে বাই সাইকেল কেড়ে নেওয়ার জন্য রাস্তার উপর টানা হেঁচড়া করা হয়। এ ঘটনায় বাবা থানায় একটি অভিযোগ করেন।

তিনি আরো জানান, ১০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে বাবা মফিজুলের বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়িয়ে রাস্তার উপর উঠতেই কুমারেশ বিশ্বাসের স্ত্রী পুষ্প রানী বিশ্বাস ও ছেলে মানিক বিশ্বাস তাকে টানতে টানতে প্রধান সড়কে তোলে। প্রতিবাদ করায় পুষ্প রানী তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে বাম হাতের কব্জির উপর টান দেয়। এতে অনেকটা কেটে গিয়ে রক্তাক্ত জখম হয়। এরপর তার গলা চেপে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

পরে মিঠুনের দোকানের পাশে তাকে ফেলে দিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি মারা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা। পথচারি গোপালপুর গ্রামের মোমেনা, বিশ্বজিৎ দত্ত, মাঝিয়াড়া গ্রামের আকরামুল, মফিজুল, খড়েরডাঙার লুৎফর রহমান শেখ ও শিবপুরের আব্দুর রশিদ সরদার তাকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সুমন রায় অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনায় তিনি গত ১৩ সেপ্টেম্বর থানায় একটি এজাহার দাখিল করলে উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন হামলাকারিদের দারা প্রভাবিত হয়ে তদন্তের নামে কালক্ষেপন করে তাকে বিষয়টি মীমাংসা করে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। নইলে ঘটনা ঠিক নয় মর্মে উল্লেখ করে থানায় একিটি জিডি করা হবে বলে উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে তিনি সোমবার আদালতে মামলা(সিআর-১১০ তালা) করেন।
তবে উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ওসি স্যারের নির্দেশে মামলা না নিয়ে আপোষের চেষ্টা করেছিলেন।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. জিয়াউর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test