E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাসপাতালে গর্ভবর্তী নারীকে লাঞ্চিত

তদন্তকালে বিবাদীকে পেটালেন তদন্ত কমিটির প্রধান

২০২০ অক্টোবর ২৭ ২৩:৩৬:২৪
তদন্তকালে বিবাদীকে পেটালেন তদন্ত কমিটির প্রধান

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে(হাসপাতাল) এ চিকিৎসাধীন গর্ভবর্তী নারী ও তার স্বামীকে তুচ্ছ ঘটনায় পরিচ্ছন্নতাকর্মি কর্তৃক মারপিটের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধানের দাড়া এবার মারপিটের স্বীকার হয়েছেন অভিযুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মি । মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর পৌরশহরের দোশিয়া গ্রামের নাট্যকর্মি জালাল উদ্দীন জিল্লুর তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিল্লুর ও তার স্ত্রী নুরেফা খাতুন(৩৫)’কে তুচ্ছ ঘটনায় অর্তকিত ভাবে ভরা হাসপাতালে প্রকাশ্যে মারপিট করার অভিযোগ তোলা হয় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মি শ্রী আবিরের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় জালাল উদ্দীন জিল্লুর বাদী হয়ে এ ঘটনার সঠিক বিচার চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এবং ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ফিরোজ আলমকে প্রধান করে এবং মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মুনিমকে সদস্য সচিব ও স্যানেটারী ইন্সপেক্টর সারোয়ার আলমকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

ঘটনার বাদী জিল্লুর জানান, তদন্তের শুরু থেকে কমিটির প্রধান ডাঃ ফিরোজ তদন্তের নামে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করে আমার স্ত্রী’কে তদন্ত কমিটির রুমে ডেকে নিয়ে জানতে চান আপনি পরিচ্ছন্নতাকর্মি আবিরে’র কি শাস্তি চান প্রশ্নে আমার স্ত্রী বলেন, আপনারা ঘটনার দিনই যদি এটা আমার কাছে জানতে চাইতেন তাহলে হতো, আজ কেন? সেদিন যদি তাকে ধমক দিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাওয়াতেন তাহলে হতো। এ সময় হঠাৎ করে ডাঃ ফিরোজ অভিযুক্ত আবিরকে ডেকে নিয়ে বাদীর সামনেই গালে এবং পিটে দু-চারটি চড় থাপ্পর দেন। এবং আমার স্ত্রীর কাছে আবিরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে কাগজে স্বাক্ষর করে নেন।

জিল্লুর জানান, সে মেয়ে মানুষ তেমন কিছু বুঝে না আমিও ভুক্তভোগী আমাকে কেন তদন্ত কমিটি বাইরে রেখে এমন ঘটনা ঘটালো তা আমি বুঝিনি। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, শুনেছি তদন্ত কমিটির প্রধান মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে এমনটি করেছেন। জিল্লুরের স্ত্রী নুরেফা জানান, আমার কাছে মনে হয়েছে তদন্তের নামে গ্রাম্য শালিস করেছে ডাঃ ফিরোজ।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, তদন্তের নামে এটি কি করা হলো আমি বুঝলাম না। তদন্তে আমাদের কোন কথার গুরত্ব দেয়নি কমিটির প্রধান ডাঃ ফিরোজ আলম। হঠাৎ করেই ঘটনার বাদীর স্ত্রী’র সামনে অভিযুক্ত আবির’কে ডেকে চড় থাপ্পর দিয়ে তদন্তের সমাপ্তি করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৭অক্টোবর) রাতে মুঠোফোনে অভিযুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মি আবিরের প্রতিক্রিয়া চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। কারণ আমার কর্মকর্তারা যেটা ভালো বুঝেছে সেটা করেছে।

জানতে চাইলে মঙ্গলবার(২৭ অক্টোবর) রাতে তদন্ত কমিটির প্রধান ডাঃ ফিরোজ আলম ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য বাদীর কথার ভিত্তিতে শাস্তি স্বরুপ আবিরকে একটু শাসন করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি আমি জানিনা তবে তদন্তের সময় মারপিট করাতো যাবে না।

জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মাহাফুজার রহমান সরকার এ ব্যাপারে মুঠোফোনে বলেন, তদন্তের সময় তদন্ত কমিটি বাদী-বিবাদী কে মারধর করতে পারেনা। তাদের কাজ হল তদন্ত করা। তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখবো।

(কেএস/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test