E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 ভুয়া বাদী সাজিয়ে আলিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা 

২০২০ নভেম্বর ০২ ১৭:৩৩:২৪
 ভুয়া বাদী সাজিয়ে আলিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারে ছুরি দেখিয়ে জুরপূর্বক তুলে নিয়ে অপহরণ করে শ্রমিক নেতা আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা ও স্বামী মোজাহিদ মিয়ার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা এবং এসব ঘটনায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মামলার দু’দিন পর সংবাদ সম্মেলন। সবই ছিলো নির্যাতনে মুখে অনেকটা চাপে পড়ে পূর্বপরিকল্পিত এমন দাবী এ মামলার বাদী আফরিন আক্তার আখি নামের এক নারীর।

সোমবার (২ নভেম্বর) দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন দাবী করেন আফরিন আক্তার আখিঁ নামের ওই নারী। মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে যখন তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করছিলেন তখন তার সাথে ছিলেন স্বামী মোজাহিদ ও শিশুপুত্র নাজিব।

সংবাদ সম্মেলনে আফরিন আক্তার আখিঁ বলেন, গত ৭ অক্টোবর বিকাশ থেকে টাকা উঠানোর জন্য বাড়ি থেকে শহরের উদ্দেশ্যে বের হলে সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন (২৩৫৯) এর সভাপতি মোঃ পাবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিমের লোকেরা তাকে ও তার দেড় বছরের ছোট ছেলে মোঃ নাজিবের গলায় ছুরি ধরে জোরপূর্বকভাবে তুলে নিয়ে যায়। পাবেল তার বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে শ্রমিক নেতা আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা (যাহার নং- ১৮০/২০২০) ও স্বামী মোজাহিদ মিয়ার বিরোদ্ধে নির্যাতনের মামলা (যাহার নং- ১৮৪/২০২০) করায়।

তিনি বলেন, মামলা করার পরদিন পাবেল মিয়া, আজিজুল হক সেলিম, স্বপন, দিলু মিয়া ও তার সহযোগীরা বলে আব্দুল আলিম আমাদের চির শত্রু। তার মান সম্মান নষ্ট করার জন্য তোকে সংবাদ সম্মেলন করতে হবে। আমি বলি এটা করতে পারবো না। এসময় আজিজুল হক সেলিম পিস্তল দেখিয়ে বলে সংবাদ সম্মেলন না করলে তর সন্তানকে আমরা মেরে ফেলবো,আর কোন দিন সন্তানকে পাবি না। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে গত ১৪ অক্টোবর ছেলেকে বাঁচানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময়ে নয়াব্রীজ থেকে কুসুমবাগ (২৩৫৯) এর গ্রুপ কমিটির সভাপতি গুলজার মিয়া তার পাশে ছিলেন এবং তাকে ভয়ভীতি দেখান।

লিখিত বক্তব্যে আফরিন আক্তার আরোও বলেন, আমার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী রুলি আক্তার গত ২৮ সেপ্টেম্বর পাবেল মিয়া, স্বপন মিয়া ও বন মিয়াকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা (মামলা নং-১৬৪/২০২০) করেন। এই মামলা করার কারণে ক্ষীপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার ছেলেকে অপহরণ করে ধর্ষণ মামলা ধামাচাঁপা ও মামলা থেকে বাঁচার জন্য এবং আমার স্বামীকে সমাজে তার মান সম্মান নষ্ট করার জন্য এই ঘটনাটি ঘটায়।

তিনি বলেন, তাঁকে অজ্ঞাত স্থান থেকে স্বামীর সাথে গোপনে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। ঐ ফোনালাপ তার স্বামী মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় অপহরণ মামলা করতে গেলে থানার ওসি মামলা নেননি। পরে ১৯ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমল আদালতে পাবেল মিয়া, স্বপন মিয়ার নাম উল্লেখ সহ আরোও ৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি অপহরণ মামলা(মামলা নং- সিআর-৪০৭/২০২০) করেন।

আখি বলেন, স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলায় অজ্ঞাত স্থান থেকে পাবেল তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে তাকে নির্যাতন করে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি নিজেকে রক্ষা করেন। পরদিন ২২ অক্টোবর পাবেল মিয়া ও আজিজুল হক সেলিম এবং তাদের সহযোগীরা দুইটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে বলে এখন তর কাজ শেষ। তর মামলা আমরা দেখব। তুই এখন তর বাপের বাড়ি ঢাকায় চলে যা। পরে তারা তাকে শেরপুর থেকে এনা পরিবহনের গাড়িতে তুলে দেয়। গাড়িতে উঠে তিনি স্বামীর সাথে যোগাযোগ করলে র‌্যাব-৯ মাধ্যমে উদ্ধার হন। পরবর্তীতে র‌্যাব তাকে মৌলভীবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আফরিন আক্তার আখিঁ জানান, গত ১৪ অক্টোবর চাপের মূখে বাধ্য হয়ে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা এলাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন করি তবে সংবাদ সম্মেলনে কোন লিখিত বক্তব্য দেইনি। তিনি দাবী করে বলেন, ওই সংবাদ সম্মেলনে চাপের কারনে তাঁকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে হয়েছে।

(একে/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test