E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হয়রানীর অভিযোগ!

২০২০ নভেম্বর ০৮ ২৩:৩৭:৩৮
পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হয়রানীর অভিযোগ!

পাবনা প্রতিনিধি : জ্বালানী ও খনিজ মন্ত্রনালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সকল শর্ত পূরণের পরও পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানী অভিযোগ করেছেন পাবনার ঈশ্বরদীস্থ মেসার্স দেওয়ান ফিলিং স্টেশনের স্বত্তাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আমজাদ হোসেন দেওয়ান। প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তেল পাম্প নির্মাণ করলেও অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় তেল মজুদ ও বিপননের অনুমতি মেলেনি বলে অভিযোগ। 

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আমজাদ হোসেন দেওয়ান ৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে প্রয়াত ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপির সুপারিশসহ জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়ায় (পাবনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের চরমিরকামারী মৌজা) দেওয়ান ফিলিং স্টেশন নামে একটি তেল পাম্পের আবেদন করেন পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর। ২৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেড বগুড়া কর্তৃক সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ডিলার হিসেবে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মৌখিক আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ভূক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আমজাদ হোসেন দেওয়ান পাম্পের যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ, জেলা প্রশাসকের এনওসি, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের অনাপত্তি, পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে চুক্তিনামা ও সরকারি ফি জমা দিয়ে ইজারাগ্রহণ, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের ছাড়পত্র(আবেদিত), পাবনা পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ স্থাপনসহ সকল শর্ত পূরণ করেন।

১৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে একপত্রে জানানো হয় মেসার্স দেওয়ান ফিলিং স্টেশনের দরখাস্ত বিবেচনা করা হয়নি। অথচ ওই সময়েই সারাদেশে ২১ টি ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয়া হয়। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে রীট পিটিশন দায়ের করা হয়। পিটিশন নং ৯৬৯৬/২০১৯ ইং। ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে রীট পিটিশনটি মঞ্জুর করা হয়। একই সাথে মেসার্স দেওয়ান ফিলিং স্টেশনের নামে পদ্মা ওয়েল কোম্পানীকে ডিলারশীপ প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে ১-০০০০০০০২৬.৪০.০৩৯.২০-১১৭ নং স্মারকে সহকারী সচিব সায়মা আক্তার স্বাক্ষরিত একপত্রে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মেসার্স দেওয়ান ফিলিং স্টেশন ২০১৪ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১/২ কিলোমিটার দুরত্ব স্থানে ফিলিং স্টেশন স্থাপনের নির্দেশনা মেনেই ভূক্তভোগী প্রতিষ্ঠান ফিলিং স্টেশন স্থাপনের আবেদন করে। আর ২০১৮ সালের সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে সড়ক-মহাসড়কের একই দিকে ২০ কিলোমিটার আর বিপরীত দিকে ১০ কিলোমিটার দুরত্ব বজায় রেখে ফিলিং স্টেশন স্থাপন করতে হবে। ২০১৪ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০১৬ সালে আবেদন করা হলেও অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় সকল শর্তপুরণের পরও ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভূক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের আবেদন নাকচ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মেসার্স দেওয়ান ফিলিং স্টেশনের স্বত্তাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আমজাদ হোসেন দেওয়ান জানান, সকল শর্তপুরণ করেছি। তারা আমাকে ডিলারের অনুমোদন দেবেন এমন আশ্বাসে আমি প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে পাম্প নির্মাণ করেছি। পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের রাজশাহী বিভাগীয় মার্কেটিং অফিসার গোলাম রসুল আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকার ঘুষের প্রস্তাব দিলে আমি তাতে রাজি না হওয়ায় আমার ডিলারশীপের অনুমোদন দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেডের রাজশাহী বিভাগীয় মার্কেটিং অফিসার গোলাম রসুল কে সেল ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘুষর টাকা চাওয়ার বিষয়ে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন । মহামান্য হাইকোর্ট, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় সুপারিশ করার পরও পদ্মা কর্তৃপক্ষ আমাকে অনুমোদন না দিয়ে হয়রানী করছে। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এমন পরিচয় দেওয়ায় তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে তিরস্কার করেছেন। উপহাস ও কটুক্তি পর্যন্ত করেছেন। তিনি বলেন, এখন আমি ব্যাংক ঋণে জর্জরিত। সুদ দিতে গিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ থেকে আমি পরিত্রান চাই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ঈশ্বরদী উপজেলা ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা চান্না মন্ডল বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে হয়রানী করা কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেখানে জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের নানা মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন, সেখানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে এ ধরণের আচরণ আশা করা যায় না। বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন দেওয়ানের উপর যে হয়রানী করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছি।

(পিএস/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test