E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

পত্র চালাচালির কারণে অভিযান ব্যহত

আগৈলঝাড়ায় অর্ধেক ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারই ভুয়া! 

২০২০ নভেম্বর ২২ ১৬:৪৮:২৯
আগৈলঝাড়ায় অর্ধেক ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারই ভুয়া! 

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সরকারী অনুমোদনহীন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের তালিকায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা অর্ধেক ক্লিনিক ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারই অবৈধ। এসব প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের নাকের ডগায় জনগনের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা বানিজ্য। শুধু অবৈধ তালিকা প্রনয়ণ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের চিঠি চালাচালির মধ্যেই যেন সব দায় শেষ! প্রতিনিয়ত প্রতারিত হয়ে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়া রোগীরা এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।  

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন অফিসের ৮নভেম্বর ২৯১১নং স্বারকের এক পত্রে লাইসেন্স বিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনিষ্টিক সেন্টারের তালিকা চেয়ে উপজেলায় পত্র প্রেরণ করেন। চাহিত ওই তালিকা অনুযায়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন স্বাক্ষরিত ১২নভেম্বর ২৮৫৭নং স্মারকে উপজেলায় মোট ৫টি অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের তালিকা সিভিল সার্জন অফিসে প্রেরণ করা উপজেলায় মোট ১০টি ক্লিনিকের মধ্যে অর্ধেক পরিমান অর্থাৎ ৫টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারই ভুয়া।

উপজেলা থেকে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেরিত অবৈধভাবে ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মধ্যে উপজেলার রাজিহার গ্রামে মারিয়া মাদার ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত সিকদার ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার, সন্যামত ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার, সেবা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার ও পয়সারহাটে জনসেবা মেডিকেল সার্ভিস এর নাম রয়েছে। ৫টি অবৈধ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটির অবস্থানই উপজেলা হাসপাতালের সামনে !

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের সামনে ও উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে ১০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের মালিকেরা যুগের পর যুগ প্রয়োজনীয় সরকারী সকল কাগজপত্র ও জনবল ব্যাতীত অ-স্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্য সেবার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। ফলে রোগীদের রোগ নির্ণয়ে ভুয়া ফলাফল প্রদানের কারনে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে অর্থ ও স্বাস্থ্যগত চরম ক্ষতির সন্মুখিন হয়ে আসছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। এসকল ভুয়া প্রতিষ্টানে পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে এক শ্রেণির দালাল ও হাতুড়ে ডাক্তাররা বড় মাপের কমিশন বানিজ্যের মাধ্যমে রোগী নিয়ে যান।

ভুয়া ওই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কোন টেকনোলজিষ্ট না থাকায় রোগীদের ভুল রিপোর্ট প্রদানের কারণে চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পরতে হচ্ছে। অবৈধ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার জেনেও হাসপাতালের ডাক্তারসহ হাতুড়ে ডাক্তাররা ওই সব ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষার জন্য রোগীদের পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে।

ভুয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে বরিশাল সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শনের নামে চলে ব্যবসায়িক কারবার। পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তারা অবৈধ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে যাবার কয়েকদিন পরেই পুণরায় চলে তাদের অবৈধ ব্যবসা।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, সিভিল সার্জনের সর্বশেষ নিদের্শে উপজেলার উপরে উল্লেখিত নামের ৫টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগেও বহুবার এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। তাতে অবৈধ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধের জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠি দেয়া হয়।

প্রশাসনিকভাবে ডাক্তাররা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে না পারায় ম্যাজিষ্ট্রেটসি’র জন্য নির্বাহী অফিসারকে চিঠি দিয়ে বলা হলেও তিনি অভিযান পরিচালনা না করায় অবৈধ এসব ডায়াগনষ্টি সেন্টার বন্ধ হয়নি।

অবৈধ এসব সেন্টারে রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয়ে ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, আমরা রোগীকে পরীক্ষা করতে বলি, তারা কোথায় পরীক্ষা করাবেন সেটা চিকিৎসকদের জানার বিষয় নয় বলেও জানান তিনি।

ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম বলেন, বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আন্তরিকতা না থাকায় অভিযান পরিচালিত হয় না। তারা চাইলেই তিনি যে কোন সময়ে অভিযান পরিচালনা করতে পারেন। তবে জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা করে সহসাই ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবেন বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test