E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মাসুদ নারী নির্যাতন মামলায় পুলিশের খাঁচায়

২০২০ নভেম্বর ২২ ১৮:২১:০২
ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মাসুদ নারী নির্যাতন মামলায় পুলিশের খাঁচায়

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এর ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের সাতক্ষীরার আশাশুনি থানা শাখার সাবেক সভাপতি ও কয়েকটি নাশকতার মামলার আসামী মাসুদুর রহমান মাসুদকে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার মামলায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। শনিবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মাসুদুর রহমান আশাশুনি সদরের গফফর মুন্সির ছেলে ও আশাশুনি সরকারি কলেজের নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক।

মামলার বিবরণে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মাসুদ পাশ্ববর্তী কালিগঞ্জের বাঁশতলা এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে চান্দুলিয়া এলাকার এক ব্যক্তির নবম শ্রেণি পড়–য়া কন্যাকে বেড়িবাঁধের উপর একা পেয়ে তার সঙ্গে অশালীণ আচরণ করে। বিষয়টি মেয়েটি তার বাবাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানায়। সাথে সাথে তার বাবা স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে শ্রীউলা চৌধুরী মোড়ে মাসুদ মটরসাইকেলে পৌছানোর পরপারই তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এঘটনায় ওই ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পুলিশ মাসুদের বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ও মটরসাইকেল জব্দ করেছে।

স্থানীয় একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি সাতক্ষীরাশহ দেশব্যাপি জামায়াত শিবিরের নাশকতা পরিকল্পনার অন্যতম মাষ্টার মাইন্ড ছিল মাসুদ। নিজের দক্ষতার বলে সে উপজেলা ছাতত্র শিবিরের সভাপতি হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর কবরস্থান সংলগ্ন মুকুলের বাড়িতে গোপন বৈঠক চলাকালে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে আশাশুনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান নিহত ও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি পিস্তল। সেখান থেকে হাত বোমাসহ বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন মাসুদ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

এছাড়া আশাশুনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন জামায়াতের অফিস থেকে লাঠিসোটা লোহার রডসহ বিভিন্ন বইপত্র রাতের আধারে সরিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে পুকুরের মধ্যে ফেলে রাখে। পরে পুলিশ সেখান থেকে তা উদ্ধার করে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনাসহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বলে এলাকাবাসি জানান। নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকলেও কৌশলে সে নিজেকে রক্ষা করে গেছে। তার বিশ্বস্ত সহযোগী পাটকেলঘাটা তৈলকুপির মোসলেম উদ্দীন সরদারের ছেলে হাসানুজ্জাানের নামে পাটকেলঘাটা থানায় ৩/৬ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ২০১৮ সালে ৮নং মামলা, একই ধারায় সাতক্ষীরা সদর থানায় ২০১৯ সালে ৩৩নং মামলা, পাটকেলঘাটা থানায় ২০১৩ সালে ৮নং ও ৪নং মামলা গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজত থেকে বের হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মাসুদ এক সময়ইতন হাজার টাকার টিউশিনি করতো। ওয়াল্ড ভিশন এনজিওতে কাজ করতো সে। এমপিও না হওয়ায পেতন না পেলেও গোপনে জামায়াতের অর্থায়নে সে সুন্দর বাড়ি বানায়।

জামায়াতের টাকায় মোটর সাইকেল, ল্যাপটপ ও ক্যামেরা কেনে। জামায়াতের মাসোহারা পেয়ে সে ভোল পাল্টে নিজেকে আড়াল করতে একটি পত্রিকায় সাংবাদিকও হয়। পরবর্তীতে সে ওই পত্রিকা পরিবর্তণ করে স্থানীয় অন্য একটি পত্রিকার কর্মকর্তা বনে যান। আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরের নাশকতা মামলার আসামীদের জিম্মি করে বর্তমানে তার এক সাংবাদিক কর্তাকে খুশী করতে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে বহু টাকা আদায় করে দিয়েছে মাসুদ। যে কারণে তার পদোন্নতি করা হয়। প্রাইভেট কারে দূরে অবস্থান করলে মাসুদ তার বসকে দেখিয়ে নিউজ করার নাম করে টাকা আদায় করতেন।

যদিও আদায়কৃত টাকার একটি অংশ মাসুদ পেতেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা। সম্প্র্রতি আওয়ামীপন্থী স্থানীয় সাংবাদিকদের পিছনে বিপুল অর্থ ব্যায় করে প্রেসক্লাবের পদ পদবিও গ্রহণ করে। এছাড়া গ্রেপ্তারের পর অর্থের বিনিময়ে তার এক সাংবাদিক বস সাতক্ষীরার জ্যেষ্ট সাংবাদিকদের একাংশকে ম্যানেজ করে স্কুল ছাত্রীর প্রতি অশালীন আচরণটি মিথ্যা প্রমাণ করতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test