E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 

হাটের জমি দখল করে রমরমা ঘর বাণিজ্য, উচ্ছেদ অভিযানে নেই এসিল্যান্ড অফিস!

২০২০ ডিসেম্বর ২৮ ১৫:৩৩:৪১
হাটের জমি দখল করে রমরমা ঘর বাণিজ্য, উচ্ছেদ অভিযানে নেই এসিল্যান্ড অফিস!

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর হাটের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে দখল হচ্ছে করতোয়া নদীর পাড়। স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের ইন্ধনে চলছে রমরমা দখল বাণিজ্য। সরকারি এই জমি দখল করে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হলেও মহেশপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোন উচ্চবাচ্য। ফলে মহামুল্যবান সরকারী হাটের জমি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। 

স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন তারা অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে মহেশপুর এসিল্যান্ড অফিসে পাঠিয়েছেন, কিন্তু উচ্ছেদের কোন লক্ষণ নেই। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, উপমহাদেশের বৃহত্তম কৃষি খামার দত্তনগরের এক একর ৪৬ শতক জমির উপর গড়ে উঠেছে বাজারটি। স্বরুপপুর ইউনিয়নের ৭১নং গোকুলনগর মৌজায় বাজারের অবস্থান।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারের জমি দখল করে বিনা বাধায় গোকুলনগর গ্রামের মুসা মিয়া, আব্দুল হালিম, আনেয়ার হোসেন ও কেশবপুর গ্রমের নুরুন্নবী নতুন পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। বাজারের ওপারে ৭২নং মথুরানগর মৌজায় রয়েছে করতোয়া নদী। নদীর পাড় দখল করে পিলার বসিয়ে প্রায় ২০/৩০টি দোকান তৈরী করা হয়েছে। দখলদাররা দাবী করেছেন, স্বরুপপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের ইন্ধনে তরা এই ঘর তুলছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে দত্তনগর বাজারের জমি দখল করা হচ্ছে। তার লোকজন জমি দখল করে ব্যবসায়ীদের কাছে ২/৩ লাখ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন বলেও এলাকায় কথিত আছে। ভূমি অফিসের লোকজন বাধা দিলেও তারা কোন কথা শোনেন না। উল্টো মহেশপুর এসিল্যান্ড অফিসে তদবীর করে উচ্ছেদ ঠেকিয়ে দেন।

তবে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খন্ডন করে জানান, রাজস্ব খাতের জমিতে কোন দোকান তৈরী হচ্ছে না। সেগুলো পড়েই আছে। বিএডিসি ও ফার্মের পড়ে থাকা জমিতে বেকার লোকদের কর্মসংস্থানের জন্য দেওয়া হচ্ছে। সেখানে কোন অবৈধ লেদদেন নেই।

চেয়ারম্যান আরো জানান, জমি বরাদ্দ পেতে দোকানদাররা আবেদনও করছে। এদিকে পান্তাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্বরুপপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের লোকজন নদীর জমি দখল করে মার্কেট তৈরী করছেন। প্রায় ১৫’শ ফুট নদীর জমি এখন বেদখলে।

তিনি বলেন, দখলদারদের তালিকা করে উচ্ছেদের জন্য বেশ কয়েকবার মহেশপুর এসিল্যান্ড অফিসে পাঠানো হয়েছে। নদীর জমি বিএডিসির মালিকানায় বলে ভুমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম দাবী করেন।

এদিকে স্বরুপ ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত ভুমি কর্মকর্তা কবির আহম্মেদ জানান, দত্তনগর হাটে প্রায় ৪০ জন অবৈধ দখলদার রয়েছে। তাদের তালিকা মহেশপুর এসিল্যান্ড অফিসে দেওয়া আছে।

তিনি বলেন, হাট পেরিফেরির কাজ চলমান থাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে বিলম্ব হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, হাট পেরিফেরির পর দোকান করার জন্য ব্যবসায়ীদের নিদ্দিষ্ট অংকের টাকা দিয়ে জমি বরাদ্দ নিতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মহেশপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আনিসুল ইসলামের সরকারী মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বতী শীল জানান, শনিবার দত্তগর বাজারের জমি দখল করে ঘর নির্মানের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, হাটের জমি দখল করে কেও পার পাবে না। আমি মহেশপুর সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তাদের তালিকা করে উচ্ছেদের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test