E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উত্তোলনের প্রলোভনে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

২০২১ জানুয়ারি ০১ ১৭:০৯:৩৫
মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উত্তোলনের প্রলোভনে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্ত করিয়ে দেয়ার প্রলোভনে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের অসহায় পরিবারের কাছ থেকে গেজেটভুক্ত এক মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অর্থফেরত পাওয়াসহ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন রাঢ়ীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে ভূক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

শুক্রবার সকালে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া গ্রামের মৃত মঙ্গল আলী শিকদারের পুত্র তৈয়বুর রহমান জানান, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমারে ডাকে সারা দিয়ে তিনি (তৈয়বুর) মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করার জন্য ভারতের চব্বিশ পরগনার রজিপুর টার্কিতে রিসিপশন ক্যাম্পে যোগদান করেন। পরবর্তীতে লেঃ নায়েক জবেদ আলীর কাছ থেকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শেষ করে কর্ণেল এমএজি ওসমানির সনদ নিয়ে ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিলের অধীনে গ্রুপ কমান্ডার নিজাম উদ্দিন কমান্ডারের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৯ সালে তিনি (তৈয়বুর) সৌদি আরবগমন করেন এবং ২০০৫ সালে দেশে ফিরে আসেন।

তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের জন্য অনলাইনে আবেদন চলছে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি অনলাইনে আবেদন করার পর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ও মাহিলাড়া ইউনিয়নের পূর্ব বেজহার বেজহার গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রাঢ়ীর স্মরনাপন্ন হন। ওইসময় আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী তাকে (তৈয়বুর) মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম গেজেটভুক্ত করার কথা বলে বিভিন্ন কৌশলে পঞ্চাশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরও বলে, আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী টাকা নিয়েও তার (তৈয়বুর) নাম গেজেটভুক্তের জন্য সুপারিশ করেননি। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিভিন্নধরনের ভয়ভীতিসহ হুমকি প্রদর্শন করে আসছে।

অপরদিকে একই ইউনিয়নের ভীমেরপাড় গ্রামের মৃত নুরুজ্জামান খানের স্ত্রী নীলা খান জানান, তার মৃত স্বামী নুরুজ্জামান খান একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু গেজেটভুক্ত হতে পারেননি। মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের জন্য অনলাইন আবেদন শুরু হলে তিনি (নীলা) উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন রাঢ়ীর স্মরনাপন্ন হন। পরবর্তীতে আনোয়ার হোসেন তার (নীলা) স্বামী নুরুজ্জামান খানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করিয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশলে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

তিনি আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শেষ হওয়ার পর তিনি (নীলা) জানতে পারেন তার স্বামীর নামে অনলাইন আবেদন পর্যন্ত করা হয়নি। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইলে তাকে ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেয় আনোয়ার হোসেন। গত কয়েকদিন পূর্বে বাকি ১ লাখ টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। কাগজপত্র যাচাই-বাছাইপূর্বক তার (নীলা) স্বামীর নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় গেজেটভুক্ত করে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করেছেন বিধবা নীলা খান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রাঢ়ীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কোন অভিযোগের প্রমান নেই।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ০১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test