E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জামায়াত নিয়ে বিএনপিতে শঙ্কা

২০১৪ এপ্রিল ২০ ১৪:২১:১৬
জামায়াত নিয়ে বিএনপিতে শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াত শেষ পর্যন্ত কি করবে? বিএনপির নেতৃত্বে ১৯ দলীয় জোটে থাকবে, নাকি সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে অস্তিত্ব রক্ষা করবে– এই প্রশ্নের পাশাপাশি বিএনপিতে অতীতের মতো জামায়াতের ডিগবাজির সম্ভাবনা নিয়েও শঙ্কিত৷

বিএনপির দু'জন নেতার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও সেরকম কিছু না হলেও অতীত পর্যালোচনা করলে জামায়াতের ডিগবাজি অসম্ভব কিছু নয়৷ তাই তাদের সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷

৫ই জানুয়ারির ‘এককরফা' নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব বাড়তে থাকে৷ নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচন প্রতিরোধে জামায়াতের সহিংসতা নিয়ে দেশে-বিদেশে চাপের মুখে পড়ে বিএনপি৷ তাই চাপ কমাতে বিএনপি নিজেই জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বাজায় রাখাতে শুরু করে৷

কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত এর জবাব দেয়৷ তারা বিএনপির পরামর্শ না মেনে অনেক জায়গায় প্রার্থী দেয় এবং ভালো ফলও পায়৷ আর এত রুষ্ট হয় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ কিন্তু জামায়াত বিএনপির এই ক্ষোভ আমলে না নিয়ে নিজেদের মতো এগিয়ে যায়৷ ফলে দূরত্ব আরো বাড়ে৷ এ কারণে ১৯ দলীয় জোটের কোনো বৈঠকও হয়নি নির্বাচনের পরে৷

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল

ট্রাইব্যুনালে বিচারজামায়াত যুদ্ধাপরাধের দায় অস্বীকার করলেও ২০১০ সালে গঠিত ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণ হচ্ছে৷

সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের সঙ্গে সরকারের দৃশ্যমান সুসম্পর্ক বিএনপিকে ভাবিয়ে তোলে৷ তাই জামায়াতসহ ১৯ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া৷

জানা গেছে, তিনি সেখানে দূরত্বের কথা উল্লেখ করে দূরত্ব কমিয়ে জোটকে কার্যকর করার কথা বলেন৷ জোটের সবাইকে ২১ এবং ২২শে এপ্রিল তিস্তা লংমার্চে অংশ নিতে বলেন৷ আর জামায়াতকে সরকারের ফাঁদে পা না দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন৷ তিনি বলেন, জামায়াতকে সরকার ধ্বংস করতে চায়৷

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সেখানে উপস্থিত মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল হালিম দূরত্বের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আগে নানা সমস্যার কারণে সব সময় যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়নি৷ এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি৷ তবে জামায়াত জোটের সঙ্গে আছে৷

তবে তাতেই আশ্বস্ত নয় বিএনপি৷ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গণজাগরণ মঞ্চ সরকারের ইশারায় দু'ভাগ হয়ে যাওয়ায় সরকারের সঙ্গে জামায়াতের ঘনিষ্ঠতার কথা আলোচনায় এসেছে৷

তবে জামায়াত এখনও ঠিক আছে বলেই মনে হয়, কিন্তু ভবিষ্যতে কি হবে তা বলা যায় না। কারণ, ১৯৮৬ সালে জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সামরিক সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেছে৷

আবার ১৯৯৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছে৷ তাই জামায়াত নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷ তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আদর্শিক নয়, আন্দোলনভিত্তিক জোট৷

বিএনপির চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে৷ তবে তা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নয়৷ তবুও নানা কারণে জামায়াতকে সতর্ক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে৷ জামায়াতের অতীতের ভূমিকার কারণে বিএনপি সব সময়ই তাদের ব্যাপারে সতর্ক, জানালেন বিএনপির এই নেতা৷

(ওএস/এটি/এপ্রিল ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test