E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নবীগঞ্জ পৌর নির্বাচন 

শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রাহেল, অর্থসম্পদ ও ঋণে এগিয়ে ছাবির, সুমনের আছে ব্যবসা

২০২১ জানুয়ারি ০৪ ১৫:০৪:০০
শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রাহেল, অর্থসম্পদ ও ঋণে এগিয়ে ছাবির, সুমনের আছে ব্যবসা

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ : আগামী ১৬ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যেই পৌর নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এবারের আসরে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজনই অবস্থানগতভাবে বেশ শক্তিশালী।  

পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীর হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরী শিক্ষাগত যোগ্যতায় সর্বোচ্চ। অর্থসম্পদ, ঋণ, মামলা ও আয়ের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরী। স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুমন এর আছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

হলফনামা অনুযায়ী, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরীর হলফনামায় সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে ‘বি.এস.এস’(পাস) আর বর্তমান মেয়র বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরী নিজেকে ‘স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম এর শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন ‘এস.এস.সি’।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত যাচাই-বাচাই শেষে মেয়র পদে এবার ৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলফনামায় আয়-ব্যয়, সম্পদের বিবরণ, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেছেন। প্রত্যেক প্রার্থীই নোটারি পাবলিক করে তাদের সকল তথ্য দিয়ে হলফনামা দাখিল করেছেন নির্বাচন কমিশনে।
বিএনপির প্রার্থীঃ

হলফনামা সূত্রে জানা যায়, বর্তমান মেয়র ও বিএনপির মনোনিত প্রার্থী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ ছাবির আহমদ চৌধুরী হলফনামায় নিজেকে ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বর্তমানে ৩টি মামলার আসামী। এর মধ্যে ৩টি মামলাই বিচারাধীন। অতীতে আরো ৩ টি মামলার আসামী ছিলেন। এর মধ্যে আইন শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ আইনের মামলায় খালাস পেয়েছেন, দূর্নীতি দমন কমশনের সম্বলিত একটি মামলায় অনুসন্ধানে প্রমাণিত না হওয়ায় কমিশনার কর্তৃক পরিসমাপ্ত, জিআর এক মামলায়ও অব্যাহতি প্রাপ্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ব্যবসাঃ তার ৩ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ রোডে মেসার্স চৌধুরী আটো রাইছমিল, নবীগঞ্জের বাউশা ইউনিয়নে শান্তিপুর এগ্রো ডেভেলপামেন্ট লিঃ ও সিলেট উপশহরে ভিলাক ফারপিউমস্ লিঃ নামের ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে।

আয়ঃ এ তিন ব্যাবসা থেকে ছাবির আহমেদের প্রতি বছরের আয় ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ২শত ৫০ টাকা। কৃষি খাতে আয় ৩৫ হাজার টাকা। পৌর মেয়র হিসেবে বার্ষিক সম্মানী ভাতা পান ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদ: হলফনামায় উল্লেখ করেছেন- ছাবির আহমদের নগদ টাকা আছে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর আছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা আছে ৫০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে ২০ হাজার টাকা। নিজের নামে স্বর্ণ আছে ১ ভরি ও স্ত্রীর নামে আছে ১৫ ভরি এবং নির্ভরশীলের নামে আছে ৩ ভরি। নিজের নামে ২টি মোবাইল ফোন ছাড়া কোন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী না থাকলেও স্ত্রীর নামে আছে- ১টি টিভি, ১টি ফ্রিজ, ২টি মোবাইল ফোন। আসবাবপত্র নিজের নামে আছে ১টি খাট, ১টি সোফা সেট, ১টি ডাইনিং টেবিল, ৮ টি চেয়ার। স্ত্রীর নামে আছে ১টি খাট, ১টি ড্রেসিং টেবিল ও ১টি আলমিরা।

স্থাবর সম্পদ:- কৃষি জমি নিজের নামে আছে ৬৫২ শতক, স্ত্রীর নামে ১৮২.৫০ শতক। অকৃষি নিজের নামে ১২৫০ শতক, স্ত্রীর নামে ১২৭ শতক।

ঋণঃ আইডিএলসি ফাইনান্স লিঃ হবিগঞ্জ শাখায় একক ঋণের পরিমান ৯৯ লক্ষ টাকা, এনসিসি ব্যাংক নবীগঞ্জ শাখায় ঋণ ৯০ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও কৃষি ব্যাক নবীগঞ্জ শাখায় ছাবির আহমদের ঋণের পরিমাণ ৫ কোটি টাকা। আলহাজ¦ ছাবির আহমদ চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের মৃত মোঃ কবির মিয়া চৌধুরীর ছেলে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীঃ

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরী হলফনামায় নিজেকে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি কোন মামলার আসামী নয়। হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘বি.এস.এস’ (পাস) বলে উল্লেখ করেছেন।

আয়ঃ গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরী‘র ক্লাইন্ট বিজন্সেস থেকে বাৎসরিক আয় ৪ লক্ষ টাকা।

অস্থাবর সম্পদঃ নগদ আছে ৫০ হাজার টাকা, স্ত্রীর আছে ৫০ ভরি স্বর্ণ। ঘরে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে- রঙ্গিন টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, মোবাইল ইত্যাদি। স্ত্রীর আছে একটি মোবাইল ফোন।

স্থাবর সম্পদঃ তার নিজের নামে কোন জমি নেই। যৌথ মালিকানাধীন কৃষি জমি আছে ৪০ একর।
দালান/আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভূমি আছে ২ একর।

গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌর এলাকার হাসপাতাল রোড, শান্তিপাড়ার হাজী গোলাম রব্বানী চৌধুরীর ছেলে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীঃ

এদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুমন। তিনি নবীগঞ্জ উপজেলা মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এস.এস.সি। নেই কোন মামলার আসামী। পেশা উল্লেখ করেছেন ব্যবসা। তিনি নবীগঞ্জ হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত ‘নবীগঞ্জ ডিজিটাল ল্যাব’ এর পরিচালক।
আয়ঃ মাহবুবুল আলম সুমন এর ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদঃ নগদ আছে ১ লক্ষ ১১ হাজার টাকা, স্ত্রীর আছে ১৫ ভরি স্বর্ণ। নির্ভরশীলের নামে আছে ৫ ভরি। নিজ নামে ঘরে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে- রঙ্গিন টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ফার্নিচার ইত্যাদি।

স্থাবর সম্পদঃ তার নিজের নামে কোন জমি নেই। যৌথ মালিকানাধীন আছে ২৩.৫১ একর।
বাড়ি ও এপার্টমেন্ট ০.১৫ একর।

মাহবুবুল আলম সুমন নবীগঞ্জ পৌর এলাকার রাজাবাদ গ্রামের মোঃ আব্দুল মতলিব ছেলে।

(এন/এসপি/জানুয়ারি ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test