E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকুপা পৌর নির্বাচন

অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর দ্বন্দ্বের মধ্যে চলছে আ. লীগের নির্বাচনী প্রচারণা

২০২১ জানুয়ারি ০৯ ১৭:৪১:৪৯
অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর দ্বন্দ্বের মধ্যে চলছে আ. লীগের নির্বাচনী প্রচারণা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে চলছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার। দলীয় মনোনিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্যের পাশাপাশি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইন্ধন দেওয়ারও অভিযোগ করা হচ্ছে।

এসব ঘটনার জেরে প্রায়ই ছোট-বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জনের মতো আহত হয়েছেন। পুলিশের হাতে আটকও হয়েছে অনেকে।

জানা যায়, গত ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগ থেকে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগ। যার এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিকদার মোশাররফ হোসেন এবং অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু।

সেই বিভক্তির প্রভাব পড়ছে পৌর নির্বাচনে। পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক গ্রুপের (মন্নু) পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আশরাফুল আজম এবং সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রুপের (উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের ছেলে) উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান খান।

পরবর্তী সময় কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান কাজী আশরাফুল আজম, বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) হিসেবে থেকে যান তৈয়বুর রহমান খান আর দলীয় চাপে সরে দাড়ান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু।

এ সকল বিষয়ে সদ্য দল থেকে বহিষ্কৃত পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক “জগ” প্রতিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান বলেন, বিগত পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত হয়েছিল এবার আমি দলীয় প্রতীকে লড়বো। কিন্তু তারা সে কথা রাখেনি বরং মেয়র প্রার্থী আশরাফুল আজম তার সমর্থিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রে আমার নামে কুৎসা রটিয়ে নৌকা প্রতীক পেতে দেয়নি।

তিনি আরো বলেন, তবু আমি থেমে থাকিনি। কেন্দ্র থেকে পৌরসভায় ফিরে স্থানীয় মাতব্বরদের সঙ্গে কথা বলে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছি। আশা করি জিতবো। জনসমর্থন দেখে নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকদের নিয়ে আমার প্রচারণায় বাঁধা সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আশরাফুল আজম জানান, পৌরসভা নির্বাচনে কোন্দলের কোনো বিষয় নেই। সবাই এক হয়ে কাজ করছি। এখানে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। দলীয়ভাবে বোঝানোর পরও সে নির্বাচন থেকে সরে না দাড়ানোয় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন সে বিদ্রোহী নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী।

তিনি আরো জানান, নির্বাচনে প্রতিটি প্রার্থীর কোনো না কোনো দলের সমর্থক, তাই এক উন্মাদ ছাড়া স্বতন্ত্র বলে কোনো কিছু নেই। তাই আমি মনে করি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো ভোট নেই ।তার সঙ্গে যে দলীয় নেতা-কর্মীরা ছিল তারা নৌকার পক্ষে কাজ করছে। কারণ দল সমর্থন করলে দলের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই কারো।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু জানান, বিদ্রোহী প্রার্থী যখন মাঠে আছে তখন নাটক তো অবশ্যই আছে। আছে আমাদের মতো কোনো নেতার ইন্ধন। তবুও আমরা শক্ত অবস্থানে আছি। চেষ্টা করছি নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে।

পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রমজান আলী ও ব্যবসায়ী মো. ইসলাম বলেন, এই দুই প্রার্থীর গ্রুপিংয়ে আমরা এক প্রকার অতিষ্ট। বিভিন্ন সময়-গোলমাল লেগেই থাকে। তাই আমরা সমাধান চাই। চাই এমন একজনকে মেয়র নির্বাচন করতে যিনি এসব ভুলে সাধারণ মানুষকে নিয়ে কাজ করবেন।

জেলা সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাগরিক অধিকার। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকলে একজন মানুষ অবশ্যই নির্বাচনে দাড়াতে পারে এবং জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হয়ে মানুষের কল্যানে অবদান রাখতে পারে। তবে দলীভাবে ব্যতীত বিদ্রোহী বলার সুযোগ নেই এবং তাকে বাধা দেওয়ারও কোনো যুক্তি নেই।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test