E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আইপিএম পুরস্কার পেলেন বারির বিজ্ঞানী, বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করার প্রত্যয়

২০২১ জানুয়ারি ১১ ১৫:৫৮:৪৬
আইপিএম পুরস্কার পেলেন বারির বিজ্ঞানী, বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করার প্রত্যয়

আশজাদ রসুল সিরাজী, গাজীপুর : পরিবেশবান্ধব বালাই ব্যবস্থাপনায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১০ম আন্তর্জাতিক আইপিএম সিম্পোজিয়াম এ ওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক আইপিএম প্রেকটিশনার (একাডেমিক) ক্যাটাগরিতে আন্তর্জাতিক আইপিএম এওয়ার্ড অব রিকগনিশন পুরস্কার-২০২০ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন স্বনামধন্য কীটতত্ত্ববিদ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের কীটতত্ত্ব শাখার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন। ফল ও সবজির পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনার জন্য সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বা আইপিএম ভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে সৃজনশীল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। 

ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন আম ও পেয়ারার মাছি পোকা দমনে যথাক্রমে ডাবল লেয়ার ব্রাউনপেপার ও পলিথিন ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির উদ্ভাবক যা কিনা ফলের মাছিপোকার আক্রমণ শতভাগ প্রতিরোধ করে ও নিরাপদ আম এবখ পেয়ারার উৎপাদনসহ ফলের খাদ্যগুণ সংরক্ষণ করে। উদ্ভাবিত পদ্ধতিসমূহ ব্যবহারে একদিকে যেমন মাছিপোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, তেমনি রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে আনা যায়। যেমন বাংলাদেশে আম উৎপাদনে পোকামাকড় দমনে কৃষকরা ১৫-২৫ বার পর্যন্ত পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে করে থাকেন, অথচ ডাবল লেয়ার ব্রাউনপেপার ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ বার কীটনাশক স্প্রে করার প্রয়োজন হতে পারে। এতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার কমে যাওয়ায় আমের উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুকিও হ্রাস পায়। আবার ডাবল লেয়ার ব্রাউনপেপার ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারে আমের আকষর্ণীয় বর্ণ হওয়ার দরুণ বাজার মূল্যও বেশি পাওয়া যায়, অধিকন্তু বিদেশে রপ্তানিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও ড. শাহাদাৎ টমেটো, বেগুন ও সীম ফসলের পোকামাকড় দমনে বায়োরেশনাল অর্থাৎ বোটানিকেল, বায়োপেস্টিসাইড ও ফেরোমনভিত্তিক আইপিএম প্যাকেজ উদ্ভাবন করেছেন যেগুলো কৃষক পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি ইউএসএআইডি এর আথির্ক সাহায্যপুষ্ট আইপিএম আইএল এবং ইউএসএআইডি হরটিকালচার প্রকল্প এর মাধ্যমেও এগুলোসহ আরও বিভিন্ন আইপিএম প্যাকেজ উদ্ভাবন করেছেন এবং কৃষকদের মধ্যে প্রযুক্তি বিস্তারের কাজ করছেন। উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনা গবেষণার মাধ্যমে তিনি ১৮টি জনপ্রিয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ দেশ-বিদেশের জার্নালে ৩৯টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ ও ১৫টি বই/বুকলেট প্রকাশ করেছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪-১৮ মার্চ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে অনুষ্ঠিতব্য ১০ম আন্তর্জাতিক আইপিএম সিম্পোজিয়ামে যোগদান করে তাঁর এ পুরস্কার গ্রহণের কথা ছিল কিন্তু বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে ইতোমধ্যেই উক্ত সিম্পোজিয়াম কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ সম্মেলন ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। মুজিব শতবর্ষে অর্জিত এ পুরস্কার তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলার ত্রিশালে জন্ম নেয়া এ বিজ্ঞানী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে বিএসসি (সম্মান) ও এমএস ডিগ্রি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test