E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ব্যবসায়ী ও তার জামাতাকে নির্যাতন 

ওসিকে বাঁচাতে নির্যাতিত’র হয়ে পত্রিকায় প্রতিবাদ দিলেন শিবির নেতা 

২০২১ জানুয়ারি ১৫ ১৫:৩৯:৫৩
ওসিকে বাঁচাতে নির্যাতিত’র হয়ে পত্রিকায় প্রতিবাদ দিলেন শিবির নেতা 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জুয়া খেলার অভিযোগ এনে হালখাতা শেষে এক রড সিমেন্ট ব্যবসায়ি ও তার জামাতাকে একইসাথে হ্যাণ্ডকাপ পরিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় প্রকাশিত সংবােেদর প্রতিবাদ দিলেন পাটকেলঘাটা থানার দালাল ও কমপক্ষে একডজন নাশকতা মামলার আসামী পাটকেলঘাটা থানা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি  মিনিষ্টার হাসান। ওসি ওয়াহিদ মোর্শেদকে বাঁচাতে বৃহষ্পতিবার তিনি সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রদূত পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপাতে প্রথমে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে যান। তার পর পত্রদূতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদকে ফোন করিয়ে নির্যাতিত ব্যবসায়ী দাউদ সরদারের কাছ থেকে কোন লিখিত কাগজপত্র ছাড়াই প্রভাব খাটিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয় বলে উল্লেখ করে প্রতিবাদ প্রকাশ করান।

ঘটনার বিবরণে জানান যায়, গত ৯ জানুয়ারি হালখাতা শেষ রাতে দোকানের মধ্যে ছেলে ও জামাতাসহ অবস্থান করছিলেন পাটকেলঘাটার সরুলিয়া ইউনিয়নের অশোকের মোড় নাম স্থানের রড ও সিমেন্ট ব্যবসায়ি দাউদ সরদার। পুলিশের সোর্স ওই এলাকার জনৈক ফারুক মাষ্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ি ওই রড সিমেন্টের দোকানে জুয়া খেলা চলছে এমন অভিযোগে পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। ডাকাত ভেবে হালাখাতায় আদায় হওয়া টাকা নিয়ে পিছনের জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ দাউদ সরদার ও ছেলে রিপনকে বেধড়ক পেটায়। পরে তাদেরকে দোকানে আনা হয়। সেখানে বসে থাকা নতুন জামাতা আলাউদ্দিনকে শ্বশুরের সঙ্গে একই হাতকড়ায় আটকিয়ে দ্বিতীয় দফায় নির্যাতনের পর পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান ওসি ওয়াহিদ মোর্শেদ। ৯ জানুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে দু'টোর দিকে তাদেরকে আবারো দোকানের সামনে এসে হ্যাণ্ডকাপ খুলে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নির্যাতন ও নির্যাতন পরবর্তী সময়ে ঘটনান্থলে উপস্থিত ভুক্তভোগী ও প্রতিবেশিরা বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। পুলিশি নির্যাতনে মারাত্মক জখম দাউদ সরদারকে ১০ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ মত দাউদ সরদারসহ কয়েকজনকে গত সোমবার থানায় ডেকে ঘটনার হন্য দূঃখ প্রকাশ করেন ওসি। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গত ১৪ জানুয়ারি দৈনিক পত্রদূত, দক্ষিণের মশাল, দৈনিক বাংলা’৭১সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ ও একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এতে বিপাকে পড়েন পাটকেলঘাটা থানার ওসি ওয়াহিদ মোর্শেদ, থানার দালাল ফারুক মাষ্টার।

সাতক্ষীরার এক সাংবাদিক বলেন, বৃহষ্পতিবার দুপুর একটার দিকে কমপক্ষে একডজন নাশকতা মামলার আসামী পাটকেলঘাটা থানা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও ২০১৩ সালে ত্রিশ মাইল নামক স্থানে পাটকেলঘাটা থানার ওসি আক্তারুজ্জামানের উপর হামলার প্রধান আসামী হাসান তার কাছে মোবাইল ফোনে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে যান। কিন্তু ওই সাংবাদিক তাকে কোন জবাব দেননি। এরপর থেকে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি প্রতিবাদ ছাপার জন্য পত্রদূতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদকে মোবাইল ফোনে বারবার অনুরোধ করেন। ওসির পক্ষে নিজস্ব নতুন প্রাইভেট কার নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আসেন শিবির হাসান। প্রতিবাদ লিপিতে লেখা দাউদ সরদারের নাম থাকলেও তার কোন সাক্ষর না থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে হাসান পাটকেলঘাটার থানার ওসির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এ সময় ওসি মোবাইল ফোনে ধারণকৃত দাউদ ও তার একটি কথোপকথন শুনিয়ে প্রতিবাদ ছাপানোর কথা বলেন। একপর্যায়ে প্রতিবাদটি শুক্রবারের পত্রিকায় ছাপা হয়।

ব্যবসায়ী দাউদ সরদার বলেন, ওসি সাহেব ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে আর এগোতে চাননি। তবে ঘটনা ঘটেনি এটা তিনি কোন সাংবাদিককে বলেননি বা কোথাও কোন প্রতিবাদ লিপিতে সাক্ষর করেননি।
দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ ব্যবসায়ি দাউদ সরদারের সাক্ষর ছাড়া শিবির হাসান ও ওসির কথামত প্রতিবাদটি ছেপেছেন বলে নিশ্চিত করেন।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test