E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করার আগেই ধ্বসে পড়েছে

২০২১ জানুয়ারি ২০ ১৬:৩৬:২৯
আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করার আগেই ধ্বসে পড়েছে

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের আবুল মেম্বারের বাজার সংলগ্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করার আগেই বাঁধ দেবে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার স্বপন মৃধা নিম্নমানের কাজ করায় এ বাঁধ দেবে গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের আবুল মেম্বারের বাজার সংলগ্ন তাফালবাড়িয়া নদী। বর্ষার মৌসুমে ওই নদীর প্রবল স্রোতে বাজার সংলগ্ন এক’শ ৩০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে জমির ফসল ও চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়ে ওই সকল গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। ওই ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ রক্ষায় এবং নদীর ভাঙ্গণ রোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইমারজেন্সি প্রকল্পের অধীনে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গত বছর নভেম্বর মাসে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এক’শ ৩০ মিটার বাঁধ নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই কাজ পায় পটুয়াখালীর আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বাঁধ নির্মাণ কাজের শুরুতেই অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রাক্কলনে উল্লেখ আছে মাটি ওজিও ব্যাগ দিয়ে টেকসই বাধ নির্মাণ করা। ওই বাঁেধর জন্য কাগজে কলমে দুই হাজার ৩’শ জিও ব্যাগ প্রস্তুত দেখানো হলেও বাস্তবে তা করা হয়নি এমন অভিযোগ স্থানীয় বারেক প্যাদা ও মনির হাওলাদারের। তারা আরো অভিযোগ করেন বাঁধ রক্ষায় বাঁশের পাইলিং দেয়া হলেও তার ছিল নড়বড়ে। আট দিনের মাথায় নড়বড়ে পাইলিং ভেঙ্গে জিও ব্যাগ নদীতে দেবে গেছে। এতে হুমকির মুখে পরেছে ওই বাঁধ। স্থানীয়দের অভিযোগ নি¤œমানের কাজ করায় আসছে বর্ষার মৌসুমে পানির ¯্রােতে বাঁধ ভেঙ্গে যাবে। এদিকে বাঁধের ভেতরের পাদদেশ সংলগ্ন স্থান থেকে মাটি কেটে বাঁধনির্মাণ করা হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ওই বাঁধ ধ্বসে পরবে।

স্থানীয় নান্নু প্যাদা বলেন, ঠিকাদার স্বপন মৃধা পাইলিং না করেই জিও ব্যাগ ফেলেছে। ফলে বাঁধে জিও ব্যাগ দেয়ার আট দিনের মধ্যেই বাঁধ দেবে গেছে। তিনি আরো বলেন, ঠিকদার নি¤œমানের কাজ করায় বৃষ্টি এলেই ওই বাঁধ ভেঙ্গে যাবে।

ঠিকাদার স্বপন মৃধার তত্বাবধায়ক মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, ঠিকাদার আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছে আমি সেইভাবে কাজ করছি।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডেরউপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোঃ আজিজুর রহমান সুজন বলেন, দেবে যাওয়া স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ ঠিক করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদার স্বপন মৃধাকে বলা হয়েছে।

বাঁধ দেবে যাওয়া ও নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বলেন, প্রয়োজনীয় ও নিয়মমত জিও ব্যাগকরেছি। কোন অনিয়ম করা হয়নি।

আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙ্গে আমার ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুর্ভোগ লাঘবে সরকার টেকসই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। তিনি আরো বলেন, স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ পেয়ে দেবে যাওয়া বাঁধ সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। ওই বাঁধ আসছে বর্ষা মৌসুমে টিকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডেরনির্বাহী প্রকৌশলৗ মোঃ কায়সার আলম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এন/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test