E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাল্য বিবাহের হিড়িক

২০১৪ আগস্ট ২৩ ১৬:৪১:২৬
বাল্য বিবাহের হিড়িক

বরগুনা প্রতিনিধি : সরকারি আইনকে অমান্য করে বরগুনায় চলছে অহরহ বাল্য বিবাহ। সরকারি বিধিমালায় ৮ বছরের নিচে ছেলে মেয়ে উভয়ই শিশু। তাই নিয়মানুযায়ী ১৮ বছরের নিচে ছেলে মেয়েদের সকল বিবাহ বাল্য বিবাহ রূপেই পরিগনিত হয়।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠিত বাল্য বিবাহের এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে কাবিন ছাড়াই গোপনে বাল্য বিবাহ পড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কিছু অসাধু কাজীর বিরুদ্ধে।

এ অপরাধ শুধু কাজীই নয় ছেলে মেয়ের অভিভাবক এবং গ্রাম্য মসজিদের ইমামরাও এজন্য কম দায়ী নয়। কাজী বিয়ে পড়াতে যখন অস্বিকৃতি জানালে তখন অভিভাবকরা যে কোন মসজিদের ইমাম দিয়ে এ কাজটি করিয়ে থাকেন।

অনেক অসাধু কাজী আছেন যারা বিয়ে পড়িয়ে খসরা করে নিয়ে যান। মেয়ে ছেলের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হয় তখন তাদের কাবিন রেজিস্ট্রেশন করা হয়। গ্রাম্য ভাষায় এর নাম বাংলা বিবাহ। আইনের ভয়ে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এটাই সমধিক প্রচলিত।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের চরকগাছিয়া গ্রামের আঃ ছোবাহানের শিশু কন্যা আঁখি নুরের বিয়ে হয়েছে কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের লতাবাড়ীয়া গ্রামের ছত্তার মোল্লার ছেলে আলমগীরের সাথে। আঁখি নুর হাজারবিঘা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। তথ্যানুযায়ী আঁখি নুরের বর্তমান বয়স ১৩ বছর। এ বিবাহ পড়িয়েছেন দক্ষিণ চরকগাছিয়া নুর গাজী বাড়ী মসজিদের ইমাম মোঃ হাবিবুল্লাহ।

কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের লতাবাড়িয়া গ্রামের করিম মোল্লার শিশু কন্যা খাদিজা বেগমের বিবাহ হয়েছে মহিপুরে, সিরাজপুর গ্রামের খালেক মুন্শীর ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে। খাদিজা বেগম এবি আলীম মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। তথ্যানুযায়ী তার বর্তমান বয়স ১৩ বছর। এ বিবাহ পড়িয়েছেন আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের কাজী মোঃ হাবিবুর রহমান। টাকার বিনিময়ে সে এই এলাকার অনেক বাল্য বিবাহ পড়িয়ে থাকেন এবং প্রতিটি বিবাহ পড়িয়ে তিনি খসড়া করে নিয়ে যান। পরে ছেলে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ন হলে তিনি কাবিন রেজিস্ট্রেশন করেন, এমনটি বললেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে লতাবাড়ীয়া গ্রামের একাধীক বাসিন্দা।

এনজিও প্লান বাংলাদেশ এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের হার শতকরা ৬৬%,বরগুনায় ৮৬%, নির্যাতিত নারীর হার শতকরা ৭২%, নির্যাতিত নারীর শতকরা ৮০% বাল্য বিবাহের শিকার। এই বাল্য বিবাহ রোধ করতে দরকার আইনের কঠিন প্রয়োগ।

বাল্য বিবাহের ব্যাপারে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ আলী ভূইয়া বলেন, আমার কাছে এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসলে সাথে সাথে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আপনাদের কাছ থেকে বাল্য বিবাহের ব্যাপারে যে তথ্য পেয়েছি তা তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test