E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচন 

বিএনপি প্রার্থী রাজাকার পুত্র, আ. লীগ প্রার্থী হত্যা মামলার আসামি

২০২১ ফেব্রুয়ারি ১৩ ১৭:৪৩:০০
বিএনপি প্রার্থী রাজাকার পুত্র, আ. লীগ প্রার্থী হত্যা মামলার আসামি

তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : আগামীকাল হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচন। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বিশ্ব ভালবাসা দিবসে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে পৌরসভার প্রতিটা কেন্দ্রে। চতুর্থ ধাপে উপজেলার চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে তিন মেয়র প্রার্থী ও ৫২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ গ্রহণ করছেন। চুনারুঘাট পৌরসভায় মোট ভোটার ১৪ হাজার ৪’শ ২ জন। 

এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭হাজার ১’শ ১১ জন ও নারী ভোটার ৭ হাজার ৩’শ ৯১ জন। ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহন হবে। ইতিমধ্যে প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পৌরসভার প্রতিটি স্থান। রাত পোহালেই আজ ভোট। তবে কে হচ্ছেন চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র এ নিয়ে পাড়া-মহল্লায় চলছে নানা গুঞ্জণ। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রুবেল (নৌকা) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নাজিম উদ্দীন শামস (ধানের শীষ) দুজনকে নিয়েই জনমনে রয়েছে মত-বিরোধ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

জানা যায়, চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নাজিম উদ্দিন শামছু একজন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। নাজিম উদ্দিন শামছুর পিতা চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক বাহিনীর পক্ষ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যা-লুটপাট, ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিকান্ড করেন। সর্বশেষ সংশোধিত রাজাকারের তালিকা অনুসন্ধানে দেখা যায় নাজিম উদ্দিন শামছুর পিতা চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিনের নাম রাজাকারের তালিকার ২০ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে তৎকালিন সময়ে নিরিহ মানুষের বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ, হত্যা-লুটপাট, ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে, তালিকাভুক্ত রাজাকারের সন্তান পৌরসভার সর্বোচ্চ কর্ণধারের আসনের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেউ কেউ বলছেন রাজাকারের সন্তান নির্বাচিত হলে তিনি কখনোই পৌরবাসীর জন্য মঙ্গলকামী হবেন না। বরাবরের মতই লুটপাট ও আত্মসাতে ব্যস্থ থাকবেন তিনি। এদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রুবেল ও আছেন নানা সমালোচনায়।

জানা গেছে, চুনারুঘাটের বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যাকান্ডের অন্যতম শীর্ষ আসামি সাইফুল ইসলাম রুবেল। গত ১৩ জানুয়ারি রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায় তাকে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত একজন চার্জশীটভুক্ত আসামি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করাটা দলের জন্য বিরাট ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এমন লোককে মনোনয়ন দেয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

তবে ইতিপূর্বে তার মনোনয়ন পরিবর্তন করার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ৩ বছর পূর্বে ২০১৮ সালের ১ মার্চ ভোরবেলা ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য আবুল হোসেন আকল মিয়া মসজিদে যাবার পথে খুন হন। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের নেতাই নন, তিনি ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও চুনারুঘাট উপজেলা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের সভাপতি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাজাকার পুত্র নাজিম উদ্দিন শামছুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জনগন রাজাকারের তালিকা দেখে না, আমার জনপ্রিয়তা দেখে। আমি কতটা ভাল সেটা দেখার বিষয়।

(টিএইচ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test