E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভাষা সৈনিক আনোয়ার জাহিদ কি রাজনৈতিক কারণে উপেক্ষিত ?

২০২১ ফেব্রুয়ারি ২০ ১৯:২৯:৫৪
ভাষা সৈনিক আনোয়ার জাহিদ কি রাজনৈতিক কারণে উপেক্ষিত ?

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহের নেতৃত্বে থাকা সে সময়কার তরুন মেধাবী ছাত্র পরবর্তীতে তথ্যমন্ত্রী আনোয়ার জাহিদ টিপুকে ২১শে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি আসে, ঘটা করে পালিত হয় নানা কর্মসুচি কিন্তু আনোয়ার জাহিদ ওরফে টিপুর নাম কেউ উচ্চারণ করেন না।

ভাষা আন্দোলনে তার অবদানকেও দিনকে দিন চাপা পড়ে যাচ্ছে। অথচ প্রয়াত ভাষা সৈনিক জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া ও তার ভাতিজা এনামুল হক কোটনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন বেগবান করতে অন্যান্যদের মতো তিনিও মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। কমিটি গঠন করে ছাত্রদের সংগঠিত করা, পোষ্টার মারা ও সিনেমা হলের ডায়াসে উঠে বক্তৃতা করে বাজিমাত করে দিয়েছিলেন সে সময় ১০ম শ্রেনীর ছাত্র আনোয়ার জাহিদ।

“ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহ” গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রয়ারি সারা দেশে হরতাল ডাকা হয়েছে। আন্দোলনমুখী ছাত্ররা অসীম সাহস বুকে নিয়ে দিনক্ষন গুনতে থাকেন। ঝিনাইদহের কলেজ ছাত্র মুসা মিয়া সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটির সভাপতি হন গোলজার হোসেন আর সাধারণ সম্পাদক হন ১০ম শ্রেনীর ছাত্র পরবর্তীতে সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার জাহিদ। ফলে ইতিহাস থেকে জানা যায় আনোয়ার জাহিদ ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

জীবিত ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন মলিতা জানান, সেদিন স্কুলের টিফিনের পর ঝিনাইদহ শহরে কাঞ্চিলালের আম বাগানে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ুয়া শিক্ষাথীদের নিয়ে গোপনে বৈঠক ডাকা হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন গোলজার হোসেন মিয়া ও সভা পরিচালনা করেন আনোয়ার জাহিদ টিপু। হারতালের প্রেক্ষপটে ঢাকায় কিভাবে কমিটি হয়েছে, কি কি কর্মসুচি ইত্যাদীর কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় ছাত্রনেতা এনামুল হক কোটনের অনুপস্থিতিতে তাকেই সভাপতি ও আনোয়ার জাহিদ টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন ও আন্দোলনের একটি রুপরেখা তৈরী করা হয়।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ২১ শে ফেব্রয়ারির হরতাল শেষে আওয়ামী মুসলীমলীগ নেতা নজমুল হক সিনেমা হল বন্ধ করে আনোয়ার জাহিদকে বক্তৃতা দিতে তুলে দেন। সেদিন টিনের চোঙ্গা হাতে নিয়ে ১৯/২০ মিনিট বক্তৃতা করেন আনেয়ার জাহিদ টিপু। সিনেমা দেখতে আসা দর্শকরা সেদিন আনোয়ার জাহিদের বক্তৃতা শুনেছিলেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। তবে বর্তমান প্রজন্মের বেশির ভাগ অভিযোগ রাজনৈতিক কারণে এই ভাষা সৈনিককে অবমুল্যয়ন করা হচ্ছে।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test