E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বড়াইগ্রামে নদী খননের অনিয়ম, কৃষকদের প্রতিরোধে বন্ধ কাজ 

২০২১ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৮:২৪:৪৮
বড়াইগ্রামে নদী খননের অনিয়ম, কৃষকদের প্রতিরোধে বন্ধ কাজ 

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পঁচা বড়াল নদী খনন কাজে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় কৃষকেরা। তাদের অভিযোগ সিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় এবং পাশাপাশি কাজটি কুষি বান্ধব না হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা বিক্ষোভ প্রকাশ করে ও তীব্র প্রতিরোধের মুখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খনন কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।

শনিবার ভোর থেকে খননের জন্য ব্যবহৃত ভেকুগুলো বন্ধ রয়েছে। এর আগে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার নগর ইউনিয়নের মেরিগাছা ব্রীজ এলাকার পঁচা বড়াল নদীর দু’পাড়ে স্থানীয় সহস্রাধিক কৃষক খনন কাজের অনিয়ম তুলে ধরে ও খনন কাজ যেনো কৃষি বান্ধব তথা ফসল ঘরে তোলার জন্য দু’পাড়ে সমতল রাস্তার ব্যবস্থা রাখার দাবি তুলে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ দাবি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার জোর দাবি জানান তারা।

জানা যায়, মেরিগাছা বাজার সংলগ্ন ব্রীজ হতে সাতইল চিকনাই নদী পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পঁচা বড়াল নদী খনন কাজ চলছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নাটোর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন কাজ চলছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস আনুষ্ঠানিক ভাবে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ১২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রকল্পের শুরুতে মেরিগাছা বাজার ব্রীজ এলাকায় ৭শ মিটার নদী খননের দায়িত্ব পায় নাটোরের এম এ কনস্ট্রাকশন। ইতোঃমধ্যে প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ তাড়াহুড়া করে শেষ করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা সাহেব সহ স্থানীয় কৃষকেরা অনিয়মের অভিযোগে খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানান, সিডিউল অনুযায়ী সমতল থেকে আট ফুট গভীরে নদী খনন করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ ৫-৬ ফুট খনন করা হয়েছে, তাও সমান্তরাল নয়। নদীর পানি শুকিয়ে বা সেচ দিয়ে পানি অপসারণ করে খনন করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। নদীর পুরাতন পাড়ি ঢালু (স্লোপ) করে না কেটে নদীর তলদেশ থেকে কাদামাটি তুলে তা দিয়ে স্লোপ করা হয়েছে। এতে এখনই এসব মাটি পুনরায় ভেঙ্গে নদীতেই পড়ে যাচ্ছে। এছাড়া নদীর মাটি কেটে পাড়ের উপরেই ফেলা হচ্ছে, যা সামান্য বৃষ্টি হলেই ধসে নদীতে নেমে যাবে। এতে নদী খননের প্রকৃত সুফল মিলবে না বলে দাবী ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তদারককারী খোকন হোসেন জানান, সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে, তবে কোথাও কোথাও কাজের তারতম্য হতে পাওে এবং সেই তারতম্য গুলো অবশ্যই ঠিক করে দেয়া হবে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বড়াইগ্রাম অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, পানি শুকিয়ে বা অপসারণ করে নদী খনন করার কথা। এছাড়া স্লোপিং ভেঙ্গে যাওয়া ও পাড়ে রাখা মাটি ধসে পুনরায় নদীতে পড়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া দু’পাড়ে রাস্তা নির্মাণের যৌক্তিক দাবিটি বিবেচনা করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।

(এডিকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test