E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে লাশ হলো কিশোরী

২০২১ মার্চ ০২ ১৩:১৬:২০
প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে লাশ হলো কিশোরী

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে প্রেমের টানে ঘরছাড়া এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২ মার্চ) সকালে শহরের মনিরাজপুর মোড় এলাকার একটি মেহগনি ও একাশি গাছের বাগান থেকে ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

সাত মাস আগে সে প্রেমের টানে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। প্রেমিকের কাছ থেকে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলেও আবার সে বাড়ি ছেড়ে শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার নূরুল ইসলামের বাড়িতে থাকত।

নিহত ওই কিশোরীর নাম সামিয়া আক্তার। সে শহরের পাথালিয়া বকুলতলা এলাকার আব্দুল সফুরের কন্যা। স্থানীয় শাহজামাল উচ্চ বিদ্যালয়ে সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।

সামিয়ার মা জয়নব বেগম জানান, সাত মাস আগে শহরের কাচারিপাড়া এলাকার মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে জনির সাথে সে পালিয়ে যায়। আমরা থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। কয়েকদিন পর সে আবার পালিয়ে যায়। আমরা খোঁজখবর নিয়ে জানি, সে শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার নূরুল ইসলামের বাড়িতে আছে। তাকে নিয়ে আসতে চাইলে সে আসেনি। নূরুল ইসলামের স্ত্রী সুজেদা বেগম তাকে মেয়ে বানিয়ে ওই বাড়িতেই রেখে দেন। জনিও সেই বাড়িতে যাতায়াত করত। তিনদিন আগে আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সামিয়া আমার কাছে দুই লাখ টাকা চায় এবং জনির সাথেই সে থাকবে বলে জানায়। আমি তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে আসি। সকালে এলাকার লোকজন ফেসবুকে ওর ছবি দেখে জানায়, মনিরাজপুর থেকে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারপর হাসপাতালের মর্গে এসে মেয়েকে দেখে চিনতে পারি।

সামিয়া যে বাড়িতে থাকত সে বাড়ির গৃহকর্তা নূরুল ইসলাম জানান, সাত মাস আগে সামিয়াকে আমার বাড়িতে আশ্রয় দেই। সে বলেছে যে, তার পরিবার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। সামিয়া আমাকে বাবা ও আমার স্ত্রীকে মা ডাকত। সামিয়ার মা জয়নব আমাদের বাড়িতে মাঝেমধ্যে এসে তার খোঁজখবর নিতেন।

নূরুল ইসলামের স্ত্রী সুজেদা বেগম জানান, সামিয়া কাল বিকেলে ওষুধ কেনার জন্য বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি। তার বাড়িতে ফোন করে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। আজ দুপুরে বাড়িতে পুলিশ আসার পর জেনেছি যে, সামিয়ার ফাঁসিতে ঝুলন্ত লাশ মনিরাজপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সামিয়ার প্রেমিক জনির বড় ভাই টনি (২৮) জানান, জনি (১৮) পেশায় ট্রাক ড্রাইভার। জনির সাথে প্রেমের সম্পর্কের দাবি নিয়ে সাত মাস আগে সামিয়া আমাদের বাড়িতে আসে। জনিকে সে বিয়ে করতে চায়। আমরা তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি এবং পুলিশে খবর দেই। পুলিশ সামিয়াকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। এরপর জনির সাথে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে আমি জানি।

জামালপুর সদর থানার ওসি মো. রেজাউল ইসলাম খান জানান, লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে ওই কিশোরীর পরিচয় পাওয়া যায়। কিশোরীর মা জয়নব বেগম মর্গে এসে সামিয়ার লাশ শনাক্ত করেন। এ বিষয়ে কিশোরী পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরআর/এসপি/মার্চ ০২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test