E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়মের হানা

২০২১ মার্চ ০৫ ১৮:২৬:০২
আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়মের হানা

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর কাজে অনিয়মের হানার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মধ্যে নির্ন্মমাণের বালু সিমেন্ট ও কিছু ঘরের মুল ভিত্তিতে অনিয়ম অনুমোদিত প্রথম শ্রেণী ইটের সাথে অন্যান্য ইটের ব্যবহার ইটের গাঁথুনিতে অধিকতর মোটা মসলা দিয়ে কাজ করে ইট বাচানো সহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইতিমধ্যে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন হোসেনগাঁও ইউনিয়নের হাজেরা দিঘীর ঘরের দেয়াল ভেঙে ফেলেছেও বলে জানা গেছে। তবে এসব অনিয়মের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নে অফিসের এক কর্মচারীর কর্তৃক রাজমিস্ত্রি নই এমন ব্যক্তির সাথে চুক্তিতে কাজ করায় সেই কর্মচারীর পরোক্ষ মদদ এমন অনিয়ম হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। উপজেলা প্রকল্প অফিস সুত্রে জানা গেছে বর্তমানে উপজেলায় মোট ২৬৬টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। যার প্রত্যেক বাড়ীর জন্য ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার নেকমরদ এলাকার ঘনশ্যামপুর পুকুর পাড় আধিবাসী পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থায়ানে বরাদ্দকৃত ৩০টি ঘরের কাজ চলছে। কেউ ইট গ্থাছে কেউ আবার ইটের নির্মাণ কাজের জন্য সহায়তা করছে। তবে গাথুনির সময় খুব একটা বিল্ডিং নির্মাণ বিধি মানা হচ্ছে না। দেখা গেছে, ঘরের মুল ভিত্তিতে অধিকতর মোটা মসলা দিয়ে ইট গাথা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন ইট বাচানোর জন্যই এমনভাবে মোটা মসলা দিয়ে ইট গাথা হয়েছে। অথচ প্রকৌশলীদের মতে ইট থেকে ইটের ম্যাজারমেন্ট নিতে আধা ইঞ্চির বেশি মসলা ব্যবহার করলে ইটের জয়েন্ট হালকা হয়ে যায়। এতে ওয়ালের লোড ক্ষমতা হ্রাস পায়।

স্থানীয়রা কাজের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে বলেন, মিস্ত্রিদের দোষ কি তাদের যেভাবে কাজ করতে বলেছে তারা করেছে। তবে কাজ যেভাবে হচ্ছে সেভাবে কাজের পরবর্তী টেকসই কেমন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ তারা যে কিছু ঘরের ভিত্তি দিচ্ছে তা এ এলাকার জন্য খুব ঝুকিপূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়াও তারা বলেন, যেভাবে সিমেন্ট বালু দিয়ে মসলা তৈরী করা হচ্ছে এটাও নিয়ে তারা সন্দেহ রয়েছে। প্রথম শ্রেণীর ইটের মধ্যে অনেক ২য় শ্রেণী সহ অন্যান্য শ্রেণীর ইট দিয়েও নির্মাণ কাজ হচ্ছে।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সিমেন্ট মসলা নিয়ে নির্মাণমিস্ত্রি তরিকুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,যথা নিয়মে মসলা তৈরী করা হচ্ছে,তবে নিয়মটা কি প্রশ্নে তিনি সুদত্তর দেননি। এসময় স্থানীয়রা ঘর নির্মাণের জন্য স্তুপ করে রাখা ইটের শ্রেণী দেখিয়ে এ প্রতিবদককে বলেন, এখানে প্রায় পাচশত ইট রয়েছে তারমধ্যে প্রায় দেড়শতাধিক ইট হবে ২য় শ্রেণীসহ বিভিন্ন ধরনের। এসময় নির্মাণমিস্ত্রিকে ইটের বিষয়টি প্রশ্ন করা হলে তিনিও বলেন, ভাটা থেকে ইট নেওয়ার সময় একটু আধটু এমন হয়েই থাকে। পাশেই স্থানীয় আরেক ব্যক্তি এ প্রতিবেদকে ডেকে দেখান,তার রুমের কিচেন ও বাথুরমের মূল ভিত্তি সরাসরি মাটির উপর দেওয়া হচ্ছে যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। মিস্ত্রিদের বার বার খানিকটা মাটি খুড়ে দিয়ে ভিত্তি দিতে বললেও তারা কথা শুনছেন না। এ সময় এ প্রতিবেদক নির্মাণ মিস্ত্রিকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান,পূর্ব দিকের ঘরগুলোর ভিত্তির সাথে মেকাপ নিতে কাজ তদারকি ব্যক্তির নির্দেশে আমরা এটি করছি এখানে আমাদের কিছু করার নেই।স্থানীয়রা বলেন, যেভাবে এই কিচেন ও বাথরুমটি দেওয়া হচ্ছে বর্ষার সময় পানির ¯্রােতে ক্ষতি হতে পারে।

এদিকে বিশ্বস্ত একটি সুত্র জানায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহকারী শাহনেওয়াজ ইউএনওকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে তার মনোনীত পার্শ্ববর্তী হরিপুর উপজেলার পেশাগত রাজমিস্ত্রি নই এমন ব্যক্তি আব্দুস সামাদের সাথে চুক্তি করে ঘর নির্মাণ কাজ করাচ্ছেন। আর এতে তিনিও কমিশন বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটা ব্যবসায়ী বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ২০টির অধিক ভাটা অথচ নির্ধারিত দুই একটি ভাটা থেকে ইট নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন,আমি শুনেছি গাড়ী প্রতি পিআইও অফিসের একজন ব্যক্তি একটি নিদির্ষ্ট অংকের টাকা কমিশন বাণিজ্য করে ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অফিস সহকারী শাহনেওয়াজের মুঠোফোনে শুক্রবার বিকেল ৪টায় ফোন দিলে তিনি তাতে সাড়া দেননি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সামিয়েল মার্ডি মুঠোফোনে বলেন, এমন তো হওয়ার কথা না। বিষয়টি আমি দেখছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন শুক্রবার বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, আপনি আমার গোল ঘরে আসেন সরাসরি কথা বলি।

(কেএস/এসপি/মার্চ ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test