E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ত্রিশালে করোনায় শিক্ষার্থীদের অনুদানের গুজব, চলছে বাণিজ্য 

২০২১ মার্চ ০৭ ১৩:৪৪:৩২
ত্রিশালে করোনায় শিক্ষার্থীদের অনুদানের গুজব, চলছে বাণিজ্য 

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ত্রিশালে করোনায় শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের আবেদনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দোকানে উপচেপড়া ভীড়। 

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা করোনায় অনুদানের ১০ হাজার টাকা পাওয়ার গুজবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইন্টারনেটে কাজ করা কম্পিউটারের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা এটিকে গুজব বলে প্রচার চালাচ্ছেন।

সরে জমিন ঘুরে দেখা যায়, শনিবার সকাল থেকে ত্রিশাল পৌর শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে আবেদন করতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রচন্ড ভীড়। কম্পিউটার দোকাদারগন প্রতিটি আবেদনে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন। আবেদনে অতিরিক্ত চাহিদা থাকার সুযোগে সরকারি কোন ফি না লাগা সত্ত্বেও কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

অনুদানের আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে প্রত্যয়ন পত্র, ফোন নাম্বার, বিকাশ নাম্বার, এন আইডি নাম্বার ও জন্ম সনদ।

সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া নোমান নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানায়, সে এ অনুদানের কথা আগে জানতো না, তাকে স্কুল থেকেও কিছু জানানো হয় নাই। সে অন্য এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছ থেকে ১০ হাজার করে টাকা দিবে শুনে সেও অনলাইনে আবেদন করতে এসেছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র আনতে টাকা লেগেছে। ক্ষেত্র বিশেষে কোন কোন স্কুল ১০০-২০০ টাকাও নিচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন।

এদিকে ৪ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রনালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান বিষয়ে কাউকে ফোন দেয়া হয়নি। এন আইডি নাম্বার, বিকাশ নাম্বার, গোপন পিন নাম্বারের মতো কোন তথ্য চাওয়া হয়নি। প্রতারক চক্র হতে সতর্ক থাকার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ত্রিশাল মহিলা ড্রিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিমুল হক তরফদার জানান, শিক্ষার্থীরা প্রত্যয়ন পত্রের জন্য হুমড়ী খেয়ে পড়ে। প্রত্যয়ন পত্র না দিলে তারা আন্দোলন শুরু করবে, তাই একসাথে সকল শিক্ষার্থীর প্রত্যয়ন পত্র দিতে বাধ্য হই। প্রত্যয়নপত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয়নি।

ত্রিশাল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঝিল্লুর রহমান আনম জানায়, গত বছরের মতো এ বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ অনুদানের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। দুরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা এই অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুস্থ, প্রতিবন্ধী, গরিব ও অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবেন। ৭ মার্চ আবেদনের শেষ সময়। তবে এটি করোনা প্রণোদনা বা স্টুডেন্ট ভাতা না।

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানায়, এভাবে না জেনে ও না বুঝে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ছোটাছুটি কাম্য নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কোন কিছু নিশ্চিত না হয়ে ভুল তথ্য শেয়ার করা ঠিক না। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি প্রত্যয়নপত্রে টাকা নেয়ার চেষ্টা করে থাকে তবে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাদের জন্য এই অনুদান নির্দিষ্ট তারায় শুধু আবেদন করবে।

(এম/এসপি/মার্চ ০৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test