E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিজিটাল মামলার আসামি সাংবাদিক ইয়ারব প্রকাশ্যে, পুলিশ বলছে খুঁজে পাচ্ছে না!

২০২১ মার্চ ১১ ১৬:৩৫:৩১
ডিজিটাল মামলার আসামি সাংবাদিক ইয়ারব প্রকাশ্যে, পুলিশ বলছে খুঁজে পাচ্ছে না!

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় ক্ষোভে নির্বাচিত সভাপতিসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্ট্যাস্টার্স দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত ডিজিটাল মামলার আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ পুলিশ বলছে খুঁজে পাচ্ছে না। আসামী ও পুলিশের এ লুকোচুরিতে এলাকায় নতুন করে হাস্য রসের গল্প শোনা যাচ্ছে।

তুজুলপুর এলাকার ট্রলি চালক আজাহারুল ইসলাম, ছোট খোকন, শুকুর আলী, ভাটপাড়ার আরিফ হোসেনসহ কয়েকজন জানান, গত ৬ মার্চ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে মমতাজ আহম্মেদ বাপি-সুমন প্যানেলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে এক ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তুজুলপুর গ্রামের মৃত. ইছহাক মোড়লের ছেলে ও অনলাইন পোর্টাল সমাজের আলো’র সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি নবনির্বাচিত সভাপতি মমতাজ আহম্মেদ বাপি ও তার খালত ভাই বাংলাভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামানসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নিজস্ব ফেইজবুক “আইডি ইয়ারব” হোসাইন ব্যবহার করে নিজের ও অন্যের ফসবুকে কয়েকটি মানহানিকর স্ট্যাটাস দেন। এ ঘটনায় সাংবাদিক মোঃ আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে গত ৯ মার্চ ইয়ারব হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেন।

তারা আরো বলেন, মামলার খবর পেয়ে ইয়ারব তাক্ষণিক আত্মগোপনে যান। পরবর্তীতে শক্তি সঞ্চয় করে পুলিশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বুধবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তিনি তুজুলপুর কৃষি ক্লাবে অবস্থান করে মেজাজের সঙ্গে সময় কাটান। অথচ রাত ৯টার দিকে ইয়ারব হোসেন চলে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ এসে দেখেশুনে চলে যায়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ইয়ারব ঝাউডাঙা বাজারের মুরগিহাটায় অবস্থান করলেও বিষয়টি তদন্তকারি কর্মকর্তাকে বলেও কোন লাভ হয়নি। জনবল কম বলে যেতে পারছেন না বলে সংবাদদাতাদের জানানো হয়। এমনকি সে পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে মামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসকুকে স্টাটাস দিচ্ছেন। আবার কয়েক মিনিট পর ওই স্টাটাস মুছে ফেলা হচ্ছে।

জানতে চাইলে তালা থানার পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তার নাম ব্যবহার করে ইয়ারব হোসেন যদি ফেসবুকে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করার কথা লিখে থাকলে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার সত্যতা পেয়েই পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জনবল কম থাকার কারণে বুধবার রাতে যথাসময়ে তুজুলপুর কৃষিক্লাবে যেতে না পারায় ইয়ারবকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। বৃহষ্পতিবার দুপুরে ঝাউআঙা মুরগিহাটায় তার অবস্থান বাদি নিশ্চিত করলেও তিনি অন্যত্র অবস্থান করায় সেখানে যেতে পারেননি। তবে ইয়ারবকে যে কোন মূল্যে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তিনি আশাবাদি।

প্রসঙ্গত, ঝাইডাঙার পাথরঘাটার এক ব্যবসায়ির দায়েরকৃত চাঁদাবাজি মামালার আসামী হওয়ার পরও ২০১৯ সালে ১৫ আগষ্ট তুজুলপুর কৃষি ক্লাবে বসে তৎকালিন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ও পুলিশ পরিদর্শক মহিদুল ইসলামের সঙ্গে এক টেবিলে বসে ভুরিভোজ করে তা ফেসবুকে আপলোড করেন ইয়ারব। এ নিয়ে পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করায় কৃষিজমি থেকে ইটভাটায় মাটি বহনকারি ট্রলি চালককে দিয়ে ওই সাংবাদিকের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করার ইয়ারব হোসে। ক্ষমতা জাহির করতে তিনি ওই মামলার চার্জশীটে সাক্ষী শ্রেণীভুক্ত হয়েছেন।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test