E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে কর্মসৃজন প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা হরিলুট

২০২১ মার্চ ২১ ১৮:৫০:৫৬
ঈশ্বরদীতে কর্মসৃজন প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা হরিলুট

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীতে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান-কর্মসূচী (কর্মসৃজন) প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও টিআর প্রকল্পে থাবা বসিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বর।

জানা গেছে, ভুয়া শ্রমিকের তালিকা করে লাখ লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে ঈশ্বরদীর ৭ ইউনিয়নে । কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখিত প্রকল্পে কাজ না করে ভূয়া নামের তালিকা বানিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে । এই অপকর্মে ইউনিয়ন পরিষদের ও মেম্বারদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত দেখভাল কর্মকর্তা। লোপাটকৃত অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা করা হচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, ট্যাগ অফিসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্প দেখভালকারী কর্মকর্তার মাঝে।

যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এই প্রকল্প চালু করেছে কার্যত ঈশ্বরদীতে তা ভেস্তে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। তবে লোপাট হওয়া টাকার একটি বড় অংশ উপর মহলে দিতে হয় বলে জানা গেছে ।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ঈশ্বরদীতে প্রথম কিস্তির ৪০ দিনের কর্মসংস্থান-কর্মসূচী (কর্মসৃজন) প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে । দ্বিতীয় কিস্তির কাজ অল্প দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানা গেছে।

চলতি বছর ঈশ্বরদীতে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান-কর্মসূচী (কর্মসৃজন) প্রকল্পের ৪০ দিনের জন্য প্রায় ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্ধ আসে । সেই বরাদ্ধ উপজেলার ৭ ইউনিয়নে খন্ড খন্ড প্রকল্পে ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রতিটি প্রকল্পে যারা কাজ করে তাদের দৈনিক হাজিরা ২০০ টাকা । সেখানে প্রতিটি প্রকল্পে একজন করে সরদার থাকবে । তার হাজিরা একটু বেশি । পিআইও এর সহযোগীতায় বেশিরভাগই ভুয়া নাম দিয়ে তালিকা তৈরী করা হয়েছে ।

সরেজমিন কয়েকটি প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি প্রকল্পেই কাজ করছে এক চতুর্থাংশের কম শ্রমিক। বাকিদের কর্মস্থলে খুঁজে পাওয়া যায়নি ।

প্রভাবশালীদের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক জানান, পিআইসিরা তাদের কাছ থেকে আগেই সব সই-স্বাক্ষর করে নিয়েছেন। তাছাড়া এমন অনেকের নাম আছে, যাদের কোনদিনই প্রকল্প এলাকায় দেখা যায়নি।

জানা যায়, বর্তমানে একজন শ্রমিকের মুজুরি ৪০০ টাকা। সেখানে মাত্র ২০০ টাকায় কোন শ্রমিক কাজ করতে আসতে চায় না। এজন্য তালিকায় অনেক গড়মিল করতে হয় সংশ্লিষ্টদের। উপর মহল ‘ম্যানেজ’ থাকায় এ কাজটি সহজ হয় বলে সূত্র জানিয়েছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সচিব জানান, তাদের বরাদ্দের অংশ থেকে পিআইওকে দিতে হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তৈহিদুল ইসলামের সাথে রবিবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় ট্রেনিং-এ আছেন জানিয়ে বলেন, ট্রেনিং শেষ হলে অফিসে বসে কথা বলবো ।

কর্মসৃজনের প্রকল্পের কয়েকটি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কাজের কোন চিহ্ণ দেখা যায়নি। কোথায়ও দুয়েকদিন সামান্য কাজ দেখিয়ে কাজ শেষ হয়েছে। এলাকাবাসীরা পুকুর চুরির এই অপকর্ম সম্পর্কে বর্ণণা দিলেও প্রভাবশালী চেয়ারম্যান মেম্বারদের ভয়ে নাম প্রকাশ করতে রাজী হয়নি। তবে তাঁরা এই দুর্নিতীর তদন্ত এবং দুর্নিতীর সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েসের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(এসকেকে/এসপি/মার্চ ২১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test