E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

২০১৪ আগস্ট ২৯ ১৪:০৯:২৪
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার বেলা দশটার দিকে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হয়েছে।

পুনরায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে নতুন নতুন এলাকা। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড আশংকা করছে দীর্ঘদিন এভাবে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকলে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধসহ সকল ধরনের বাধ হুমকীর মুখে পড়বে। ইতিমধ্যেই জেলার কাজিপুর উপজেলার মেঘাই রিং বাধের প্রায় ৩০ মিটার ধ্বসে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রথম দফায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জে পয়েন্টে বৃদ্ধি পাবার ফলে জেলার প্রায় ৭টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। প্রথম দফায় পানি কিছুটা কমে স্থীতিশীল থাকায় বন্যা পরিস্থিতিও অপরিবর্তিত থাকে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার থেকে আবারও যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করে। দু দিনে প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর ফলে প্রথম দফায় বন্যা কবলিত হওয়া প্রায় ৭টি উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ পুনরায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বন্যায় তলিয়ে যায় ঐ উপজেলাগুলোর প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর আবাদি জমির ফসলও পানির নিচে রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়ার সাথে সাথে আরো প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমান ত্রান বিতরন করা হয়েছে তা বন্য আক্রান্তের তুলনায় অপ্রতুল। এছাড়া বিতরনকৃত এই ত্রান এখনো বিভিন্ন এলাকার দুর্গতদের হাতে পৌছেনি। ফলে ঐ এলাকার বন্যা কবলিত মানুষেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এদিকে দীর্ঘ সময় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে যমুনার তীরে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধসহ সকল ধরনের বাধ হুমকীর মুখে পড়ার আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

যার ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যেই শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলার কাজিপুর উপজেলার মেঘাই রিং বাধে ধ্বস দেখা দেয়। মুহুর্তের মধ্যে বাধের প্রায় ৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় তাৎক্ষনিকভাবে প্রায় ৬ শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। কাজিপুর-ধুনুট আঞ্চলিক সড়কে পানি উঠে পড়ায় বন্ধ রয়েছে ঐ রুটের যান চলাচল।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বিশেষায়িত শাখার (বি আর ই) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম মেঘাই রিং বাধ ভাঙ্গার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যমুনার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ায় অতিরিক্ত পানির চাপে এই বাধটি ধ্বসে গেছে। তাৎক্ষনিকভাবে বাধের ভাঙ্গা অংশে বালির বস্তা ও ব্লক নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিল্লাল হোসেন শুক্রবার জানান, দ্বিতীয় দফায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাত্তদের সহায়তা করার জন্য সার্বিক ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় দ্রুত ত্রান পাঠানো হচ্ছে।

(এসএস/এটিআর/আগস্ট ২৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test