E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঘুমন্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম, স্বামী গ্রেফতার

২০২১ এপ্রিল ১৬ ১৭:০২:১৫
ঘুমন্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম, স্বামী গ্রেফতার

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : দুই সন্তানের জননী, ঘুমন্ত স্ত্রী মোসাঃ সুমাইয়াকে মানষিক ভারসাম্যহীন স্বামী আবদুল করিম খন্দকার ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সুমাইয়ার শরীরের ২৪-২৫ স্থানে জখম হয়েছে। গুরুতর আহত সুমাইয়াকে স্বজনরা উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে তালতলী উপজেলার দক্ষিণ গাববাড়িয়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ স্বামী আব্দুল করিম খন্দকারকে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার সকালে পুলিশ তাকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার কড়াইবাড়িয়া গ্রামের সিদ্দিক হাওলাদারের কন্যা সুমাইয়া বেগমের সাথে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গাববাড়িয়া গ্রামের মজিদ খন্দকারের ছেলে আব্দুল কবিম খন্দকারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। গত তিন বছর পুর্বে হঠাৎ করে স্বামী করিম মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। ওই সময় থেকে সুমাইয়ার জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। স্বামীর এমন অবস্থায় দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়ে সুমাইয়া। স্বজনদের সহযোগীতায় ওই দুই সন্তানকে বরগুনা এতিম খানায় লেখাপড়া করতে দেয়। তারা ওই এতিম খানায় লেখাপড়া করছে।

স্থানীয়রা জানান, করিম খন্দকার গত তিন বছর পুর্বে মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীকে কারনে অকারনে মারধর করে আসছে। বুধবার রাতে স্বামী-স্ত্রী ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। গভীর রাতে স্বামী করিম খন্দকার কিছু না বলেই ঘুমন্ত স্ত্রী সুমাইয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। তার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সুমাইয়ার শরীরের ২৪-২৫ টি স্থানে গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা ওই রাতেই সুমাইয়াকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।

এ ঘটনায় সুমাইয়ার বড় ভাই মোঃ হানিফ বাদী হয়ে আব্দুল করিম খন্দকারসহ তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে করিম খন্দকারকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার সকালে করিমকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে পুলিশ আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল করিম খন্দকারের কাছে স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে অসংলগ্ন কথা বলেন।

স্থানীয়রা বলেন, কবির খন্দকার একজন মানষিক রোগী। ওর শ্বশুর বাড়ীর লোকজন করিমের পরিবার দেখভাল করে। তারা আরো বলেন, যখম করিম সুস্থ্য থাকে তখন সব ঠিকঠাক মত করতে পারেন। কিন্তু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্ত্রীসহ এলাকার মানুষকে মারধর ও বাড়িঘর ভাচুর করে।

আহত সুমাইয়ার বড় ভাই হানিফ হাওলাদার বলেন, বোনকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছি। তিনি আরো বলেন, করিম খন্দকার প্রায়ই আমার বোনকে কারনে-অকারনে মারধর করে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।

তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ধারনা করা হচ্ছে করিম খন্দকার মানষিক রোগী। তিনি আরো বলেন, কবির খন্দকারের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

(এন/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test