E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

এ যেন মৌমাছির বাড়ি

২০২১ এপ্রিল ১৭ ১৫:২৬:৪০
এ যেন মৌমাছির বাড়ি

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : চাঁদপুর জেলার কচুয়ায় সর্ববৃহত্তম কড়ইয়া ইউনিয়নের নিরিবিলি পরিবেশে অজপাড়া গ্রামের মধ্যে এক তলা বাড়ি বানিয়ে বসবাস উপযোগী করে তুলেছিলেন কচুয়া উপজেলার বাসাবাড়িয়া গ্রামের হাজী বাচ্চু মিয়া। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। ৩০ বছর পূর্বে তিনি এ বাড়িটি দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি করেছিলেন। ওই সময় নতুন বাড়িতে উঠতেই হঠাৎ করে পঙ্গপালের মতো উড়ে এসে এক প্রকার দখল করে নেয় মৌমাছির দল। রাতারাতি হাজার হাজার মৌমাছি একে একে ২০-৩০টি মৌচাক তৈরি করে। তারপর থেকে প্রতি মৌসুমে পঙ্গপালের মতো উড়ে এসে মৌচাক তৈরি করে। এ বছর ২০টি মৌচাক তৈরি করে, এর মধ্যে ১৭টি বাড়ির চারদিকে ও ৩টি গাছের ডালায়।

কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের বাসাবাড়িয়া গ্রামের হাজী বাচ্চু মিয়া জানান, বাড়ি তৈরির পর থেকে বাসা বেঁধে বাড়িটি এক প্রকার দখলে রেখেছে মৌমাছি। বাড়ির বেলকনিসহ বাড়ির চারপাশে ২০টি ছোট-বড় মৌমাছির চাক আছে। পুরো বাড়িটিকে ঘিরে রাখায় প্রথম দেখাতেই যে কেউ ভয়ে আঁতকে ওঠে। দেখতে অন্যরকম লাগায় এলাকার মানুষের কাছে বাড়িটি এখন মৌমাছির বাড়ি হিসেবে পরিচিত। মৌমাছির দল বাড়ির সদস্যদের সাথে একই পরিবার হিসেবে নিজেকে খাপ খেয়ে নিয়েছে। তবে দিন রাত ভোঁ ভোঁ শব্দ বাড়ির সদস্যদের কাছে গানের আওয়াজে পরিণত হয়েছে।

এই বাড়ির সদস্যরা জানায়, মৌমাছির শব্দ না শুনলে অনেকের ঘুমই আসে না। বিশেষ করে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কান্নার শব্দ মৌমাছির ভোঁ ভোঁ শব্দে বন্ধ হয়ে যায়। সত্যিই মৌমাছিদের নিয়ে পরিবার আমার।

স্থানীয় মানিক মেম্বার জানান, একতলা বিশিষ্ট বাড়ির বেলকনি, কার্নিশ, দেওয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে মৌমাছি চাক তৈরি করে আছে। প্রতি বছরই মৌমাছির দলের আগমনের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর এসেছে ২০টি মৌমাছির দল। গত ৮ মাসে দুইবার মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। মধু ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করা মধু কিনে নিয়ে যায়। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মধু বিক্রি হয়। এলাকার স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে এই বাড়ি ও মধু খুবই পরিচতি। এলাকার বিভিন্ন মানুষ তাদের প্রয়োজনে খাঁটি মধু সংগ্রহ করে আমাদের কাছ থেকে।

মধু সংগ্রহকারী জীবন জানান, মৌমাছি সাধারণত গাছের উঁচু ডালে কিংবা বাড়ির বেলকনিতে বাসা করে। এরা অনেক শান্ত, তবে রেগে গেলে নিস্তার নেই। গ্রামের চাকের মধুতে হরেক রকমের ফুলের মধু আহরণ করায় এ মধুর স্বাদও অনেক বেশি। মৌচাকে থাকা রাণী মাছির এই বাড়িটি পছন্দ, তাই প্রতিবার একই স্থানে এরা বাসা করে।

দরিয়াহয়াতপুর ও বাসাবাড়িয়া গ্রামের গৌতম সরকার, হাজী সোলেমান, মোঃ সেলিম ও সোহেল রানাসহ আরো অনেকে জানান, ৪টি গ্রাম নিয়ে এই ওয়ার্ডটি। গত ইউপি নির্বাচনে বিপুল ভোটে মানিক মেম্বার জয় লাভ করে এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি পারিবারিক সমস্যারও সমাধান করেছেন। জনপ্রিয়তার শীর্ষ অবস্থান করছেন এবং তাঁর বাড়িতে এ মৌচাকের মধু নিতে মানুষের ভিড় লেগে থাকে প্রায় সময়। গরিব অসহায় মানুষের মাঝে ফ্রিতে মধু বিতরণ করে আশপাশের এলাকায় প্রচুর সুনাম কুড়িয়েছেন। বিশেষ করে ওই এলাকায় শিশু জন্মের পরেই মানিক মিয়ার বাড়িতে বোতল নিয়ে ভিড় জমায় এলাকার মায়েরা।

(ই্উ/এসপি/এপ্রিল ১৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test