E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন

২০২১ এপ্রিল ২০ ১৫:১৫:৩৫
ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় এবারে রাতের আঁধারে অবাধে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী নবীনগরসহ কয়েকটি স্থানে বালু উত্তোলনের কারণে চরাঞ্চলের শত শত একর ফসলী জমি হুমকির সম্মুখিন। বালু উত্তোলনের মূল হোতারা এলাকার প্রভাবশালী। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকা এই চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ক্ষমতার দাপটে এরা আইন-কানুন তোয়াক্কা করছে না বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন। প্রকাশ্যে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি ইতোপূর্বে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এসময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালিত হলেও মূল হোতারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। লকডাউনের কারণে এবং পাবনার বর্তমান পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঈশ্বরদীর পুলিশ বিভাগ  দিনের বেলায় ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও আটকের কারণে এখন রাতের আঁধারে অবৈধ বালু উত্তোলন ও রাতেই পাচার হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে লক্ষীকুন্ডার নবীনগর হতে দাদাপুর এবং কামালপুর এলাকা ঘুরে ৬-৭টি স্থানে বালু উত্তোলনের চি‎হ্ণ ও বালু কাটার মেশিন ‘ভেকু’ দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করে এলাকাবাসীরা জানান, নবীনগর, দাদাপুর ও বিলকেদার এলাকার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশী বালু উত্তোলন হচ্ছে। লকডাউন এবং প্রশাসনের অভিযানের কারণে এবারে কৌশল পরিবর্তন করে দিনের চেয়ে রাতেই বেশী বালু কাটা হচ্ছে। এসব কাজে নিয়োজিত রয়েছে বিপুল সংখ্যক দিনমজুর । প্রভাবশালীদের নিয়োগকৃত কর্মচারী বালু বিক্রি ও ট্রাকলোডের কাজ করে। আর মূলহোতারা থাকে পর্দার আড়ালে।

এলাকাবাসীরা আরো জানান, পদ্মা নদীর আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের সাথে এই চক্রের আঁতাত রয়েছে। ট্রাক প্রতি একটি নির্দ্দিষ্ট বখরার বিনিময়ে সহজেই অবৈধ বালু উত্তোলন করছে।

এদিকে বালু বহনকারী ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানের কারণে লক্ষীকুন্ডার বেশীরভাগ রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব রাস্তায় মানুষ, সাইকেল, রিক্সা, অটো, ভ্যান, সিএনজি এমনকি মোটরসাইকেল চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীরা জানান, প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু উত্তোলনের কারণে চরাঞ্চরের ফসলী জমি বিনষ্ট হওয়ায় ঈশ্বরদীর কৃষি অর্থনীতি হুমকীর সম্মুখিন।

লক্ষীকুন্ডার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরীফ জানান, কে বা কারা জড়িত বলতে পারব না। যারা জড়িত দায় তাদের। তবে আমার কোন লোক বা ইউনিয়ন আওযামী লীগের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।

পদ্মা নদী ও চরাঞ্চলের দায়িত্বরত লক্ষীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রিয়াদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি গত ১০ এপ্রিল এখানে যোগদান করেছি। দায়িত্ব নেয়ার পর নদীতে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। লক্ষীকুন্ডার বিলকেদার, কামালপুর এলাকায় রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আমিও পেয়েছি। আমাদের রাজশাহীর পুলিশ সুপারও অভিযানের কথা বলেছেন। ২-৪ দিনের মধ্যেই আমরা অভিযান চালিয়ে ভালো খবর দিতে পারব বলে জানান তিনি।

ট্রাক প্রতি নির্দিষ্ট অংকের টাকার বিনিময়ে বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক বড়ো সীমানা জুড়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। একস্থান হতে আরেকস্থানে পোঁছতেই ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগে। ততক্ষণে অপরাধীরা কাজ শেষ করে পালিয়ে যায়।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, আমরা ওই এলাকায় কয়েকদফা অভিযান চালিয়েছি। বেশ কয়েকটি ড্রাম ট্রাক, ট্রাক, ভেকু জব্দ করার পাশাপাশি কয়েকটি মামলাও দাযের হয়েছে। রাতের আঁধারে বালু কাটার বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test