E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লকডাউনেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ঢাকাগামী যাত্রীদের ঢল 

২০২১ এপ্রিল ২৪ ১৮:২৩:৪৯
লকডাউনেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ঢাকাগামী যাত্রীদের ঢল 

আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাড়া দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ রয়েছে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চ সার্ভিস। বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপার। কিন্তু লকডাউনে ফেরিতে এ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ী ও প্রশাসনের অনুমতিতে বিশেষ জরুরীভাবে কোন যানবাহন ব্যাতিত অন্য কোন যানবাহন ও যাত্রী পারাপার বন্ধের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও দৌলতদিয়া দিয়ে পারাপার হচ্ছে ব্যাক্তিগত অসংখ্য ছোট গাড়ী ও অসংখ্য যাত্রীও।

আগামীকাল থেকে সরকার দিনে ৬ ঘন্টা দোকানপাট ও শপিংমল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ঘোষণা দেওয়ায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে হাজার হাজার যাত্রী শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ভীড় করছে।বেলা বাড়ার সাথে সাথে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে যাত্রী সাধারনের ঢল নেমেছে। আর লঞ্জ বন্ধ থাকার কারনে ছোট ছোচ ট্রলার ও স্প্রিরিট বোর্ডে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-যমুনা পারি দিচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগার সামনে দিয়েই। যাত্রী ও ছোট গাড়ীর চাপে এ সময় ফেরিতে সিরিয়াল না মেনে পুলিশের সামনেই গাদাগাদি করে উঠতে ও নামতে দেখা গেছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও যাত্রীদের। নাই কোন সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির বালাই।ফেরিতে মোটরসাইকেলের বেশি ভাড়া নেয়ার এ কারনে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে পার করা হচ্ছে যাত্রী ও মোটরসাইকেল।

শনিবার সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহনে করে মানুষ ঘাটে আসছে। ভেঙে ভেঙে ঘাটে পৌঁছতে তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো ফেরি ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে না। অনেক সময় অ্যাম্বুলেন্স পেতে ফেরিগুলোকে অপেক্ষায় করতে হয় দুই-তিন ঘণ্টা পযর্ন্ত। এসময় ঘাটে আসা যাত্রী এবং ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকেও অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন এ্যাম্বুলেন্স ও পাশ নিয়ে কোন জরুরী গাড়ী ঘাটে আসবে। একটি ফেরি ছাড়ার প্রস্তুতি নিতেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা। ফেরিতে পার হতে গেলে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থাকতে হয় এজন্য বিকল্প হিসাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও ট্টলারেই পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন শত শত মানুষ। বেশিরভাগের মুখে নেই মাস্ক। উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্বও।

বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তা এবং নৌ-পুলিশের চোখের সামনেই ট্রলারে যাত্রী পারাপার হলেও তা বন্ধে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।অভিযোগ রয়েছে, ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে উৎকোচ নিচ্ছে ফেরিতে যাত্রী পারাপার টিকিটের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের লোকজন। প্রতি ট্টিপে ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন তারা।

যশোর থেকে মোটরসাইকেল করে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা এনজিও কর্মী তৈফিকুল আলম জানান, আমার মা অসুস্থ। তাই গাজীপুরে যাবো। অনেক কষ্ট করে ঘাটে এসেছি। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ঘাটে বসে আছি। কিন্তু নদী পার হতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে ট্রলারে যাচ্ছি।দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে করে পাটুরিয়া ঘাটে যাচ্ছেন অসুস্থ্য শহীদুল আলম।

তিনি জানান, সকালে নড়াইল থেকে আসছি ঘাটে ট্রলারে যাত্রী ভাড়া ৫০ এবং মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়েছে ৩০০ টাকা। এটি এক ধরনের জুলুম। মানুষের বিপদকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করছে ট্রলারগুলো।

ট্রলার চালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘লঞ্চ, ফেরি বন্ধ। যাত্রীরা পারাপার করতে পারছে না। তারা বাধ্য হয়ে ট্রলারে পার হচ্ছে। সবারই বিপদ। তারা যাচ্ছে দেখেই আমরা তাদের নিচ্ছি। প্রশাসনের লোকজন মাঝে মাঝে বাধা দেয়। এরপরও কী করার আছে? পেটের দায়ে নৌকা চালাই’।

বিআইডব্লিউটিসির টার্মিনাল সুপারেনটেন্ড খুরশিদ হাসান বলেন, ফেরির পন্টুনে না ভিড়তে ট্রলারগুলোকে বলা হয়েছে। এরপরও সুযোগ পেলেই তারা যাত্রী তুলে।

আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।গোয়ালন্দ থানার ওসি আবু তাইয়াবীর বলেন, ট্রলারে অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ট্রলারকে জরিমানাও করা হয়েছে। এরপরও প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ট্রলার মালিক যাত্রী পারাপার করছে। এ বিষয়ে আরো কঠোর অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test